নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
মাওলানা মোহাম্মদ শামীম (৬১) দৃষ্টিহীন। অন্যের সহায়তায় চলাফেরা করেন। তিনি কি না নিজ বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে ককটেল ও ইটপাটকেল ছুড়েছেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন ছাত্রলীগের কর্মী পরিচয়ে এক যুবক! ওই মামলায় শামীম ৩ নম্বর আসামি।
৫ অক্টোবর রাতে লোহাগাড়া থানায় মামলাটি করেন মো. মামুনুর রশীদ (২৮)। এতে ছয়জনের নাম উল্লেখসহ ৮০-৯০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পদুয়া ঘোনারপাড়া এলাকার বাসিন্দা। মামলায় তিনি নিজেকে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী এবং আসামি শামীমের নামের পাশে ব্র্যাকেটে ‘অন্ধ শামীম’ উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি মামলা হয়েছে। সেখানে কাদের আসামি করা হয়েছে, আমি জানি না। তদন্তে যদি অন্ধ ব্যক্তি মামলার আসামি করা হয়, তাহলে বিষয়টি দেখব।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৫ অক্টোবর সকালে দোকান থেকে নাশতা নিয়ে ফেরার পথে উপজেলার ঠাকুরদীঘি এলাকায় মামলার ১ নম্বর আসামি জামায়াতের আমির আসাদুল্লার নেতৃত্বে ৮০–৯০ জন ব্যক্তি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দেন। এই অবস্থা দেখে বাড়ি ফিরছিলেন ছাত্রলীগ কর্মী মামুনুর রশীদ। এ সময় তাঁর দিকে তেড়ে আসেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। তাঁকে আওয়ামী লীগের দালাল আখ্যা দিয়ে মারধরসহ সাধারণ জনতাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, পথরোধ, জখম ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
মামলার ৩ নম্বর আসামি মাওলানা শামীম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারি না। আমার বাড়ি থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে মিছিল করা, ককটেল ফাটানো কীভাবে সম্ভব?’
শামীমের স্ত্রী রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমি আমার স্বামীকে অন্ধ হিসেবেই পেয়েছি। তিনি একজন সহজ-সরল মানুষ। ওনার মতো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমরা এই মামলা প্রত্যাহার চাই।’
বাদী মো. মামুনুর রশীদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যারা ককটেল ফাটিয়েছে, আমার ওপর হামলা করেছে তাদের নামেই মামলা করেছি।’ দৃষ্টিহীন শামীমকে আসামি করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
মামুনুর রশীদের বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানা ছাত্রলীগের সভাপতি আশিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এ নামে কোনো কর্মীকে তিনি চেনেন না।