বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, ‘ছবি বানানো র্যাবের কাজ না। কিন্তু এটা বানানোর কারণ হচ্ছে, জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই। র্যাব ফোর্সেস তিন বছর ধরে যে অমানুষিক পরিশ্রম করে সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত করা হয়েছে। সেটিরই একটি ডকুমেন্টারি।’
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরায় স্টার সিনেপ্লেক্সে র্যাব নির্মিত ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন।
পুলিশপ্রধান বলেন, ‘সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করার পর সেটি ধরে রাখার কাজটি সার্থকভাবে করতে পেরেছে র্যাব। সেটি ধরে রাখার পাশাপাশি যারা ডাকাত ছিল তাদের কিন্তু আমরা পুনর্বাসিত করেছি। কারণ আমরা তাদের শুধু আত্মসমর্পণ করিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, র্যাবের পক্ষ থেকে পুনর্বাসন এবং এখনো খোঁজখবর রাো হচ্ছে।’
সুন্দরবনে মৎস্যসম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে উল্লেখ করে মঞ্চে বসা বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে আইজিপি বলেন, ‘তিনি জানেন যে তাঁর এলাকার মানুষ কোন ধরনের বেনিফিট ভোগ করছে। আমি তাঁকে সামনে পেয়েছি এ জন্য অনুরোধ করতে চাই, সুন্দরবন ডাকাতমুক্ত হওয়ার পর যেটা হয়েছে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে, হরিণের সংখ্যা বেড়েছে, পর্যটকের সংখ্যা বেড়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন পশু-পাখি সুন্দরবন থেকে পাচার বন্ধ হয়েছে। আগে বাঘের চামড়া পাচার হতো, হরিণের চামড়া পাচার হতো, কুমিরের চামড়া পাচার হতো। এগুলো বন্ধ হয়েছে। ফলে এখন প্রচুর পরিমাণে পশু-পাখির বিস্তার ঘটেছে সুন্দরবনে। এগুলো একটা ইম্প্যাক্ট, যা সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করার পরে বহুমুখী ইমপ্যাক্ট তৈরি হয়েছে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশে অনেক কিছু উন্নয়ন হয়েছে এবং দেশের বহু দিকে উন্নতি হয়েছে। আমরা অনেক বিষয় এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বৈশ্বিক পর্যায়ে আছি। আমরা অহংকার করতে পারি আমাদের অর্জন নিয়ে। কিন্তু এই জায়গাটা নিয়ে আমাদের কিছু একটা করা দরকার, সে বিষয়ে আপনারা একটি উদ্যোগ নেবেন সেই অনুরোধ রইল।’
‘এই সিনেমার পরিচালক ও প্রযোজনার পেছনে যে ব্যয় হয়েছে, এটা যদি কেউ নিজেরা বানাতে যায় তাহলে আরও তিন-চার গুণ বেশি ব্যয় করতে হতো। আমরা অত্যাধুনিক লজিস্টিক ও সিস্টেম ব্যবহার করেছি ফ্রিতে। সাধারণ কোনো প্রযোজক বা পরিচালক তৈরি করেলে তিন-চার গুণ বেশি খরচ হবে। তাহলে সেটি হতো খুবই ব্যয়বহুল একটি প্রজেক্ট। এবং এখানে প্রচুর আমাদের সদস্য অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে অনেক কিছুই আছে, যেখানে আমাদের প্রফেশনালরা সহযোগিতা করেছেন, এটা একটি ভালো ছবি হবে। আপনারা সবাই উপভোগ করবেন। এই প্রজেক্ট নেওয়ার পেছনে দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। ছবি বানানো র্যাবের কাজ না। কিন্তু এটা বানানোর কারণ হচ্ছে জাতি হিসেবে আমরা অনেক কিছু ভুলে যাই। র্যাব ফোর্সেস তিন বছর ধরে অমানুষিক পরিশ্রম করে সুন্দরবনকে জলদস্যুমুক্ত করেছে।’
র্যাবের সাবেক ডিজি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এখন যে শান্তির সুবাতাস বইছে, কিছুদিন পরে মানুষ ভুলে যাবে যে কন্ট্রিবিউশনটা কী ছিল। আমরা চেয়েছি কন্ট্রিবিউশনটা কী সেটা ডকুমেন্ট হিসেবে তুলে ধরার জন্য এটা তৈরি করা হয়েছে।’