নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
অবশেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হস্তক্ষেপে ধামরাই পৌর এলাকায় যানবাহন থেকে চাঁদা আদায় বন্ধ হয়েছে। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় রিকশা ও ভ্যানসহ যানবাহন থেকে টোলের নামে এই চাঁদা আদায় করা হচ্ছিল।
ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সভায় টার্মিনাল ব্যতিরেকে অন্য কোনো সড়ক বা মহাসড়কসহ সিটি করপোরেশন ও পৌর এলাকায় যানবাহন থেকে চাঁদা বা টোল আদায় বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়।
ধামরাই পৌর এলাকায় কোনো টার্মিনাল বা যানবাহনের পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা না থাকলেও পৌর মেয়র গোলাম কবির চলতি বছরের জন্য যানবাহন থেকে টোল আদায়ের ইজারা প্রদান করেন। ইজারা নেওয়ার পর ইজারাদারের লোকজন পৌর এলাকার ঢুলিভিটা, ইসলামপুর, থানা রোড, চন্দ্রাইল, আইঙ্গন, সীমা সিনেমাহল মোড় ও রথখোলা থেকে চলমান রিকশা ও ভ্যানসহ যানবাহন থেকে টোলের নামে অবৈধভাবে ২৫ টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করে আসছিল।
ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী সরেজমিনে তদন্ত করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তিনি লিখিতভাবে ঢাকার জেলার জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেন। এরপরই মন্ত্রণালয় থেকে টোল আদায় বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার স্থানীয় সরকার পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ সচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এক পত্রে পৌর মেয়রকে পৌর এলাকার ভেতরে পার্কিং ও টোলের নামে চাঁদা আদায় বন্ধ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে নির্দেশ দেন। অপর এক পত্রে সরকারি সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যানবাহন থেকে টোল আদায়ের ইজারা প্রদান করায় সাত কর্মদিবসের মধ্যে মেয়রকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর পরপরই টোল আদায় বন্ধ হয়ে যায়।
আজ শুক্রবার পৌর এলাকার ঢুলিভিটা, ইসলামপুর, থানা রোড, চন্দ্রাইল, আইঙ্গন, সীমা সিনেমাহল মোড় ও রথখোলায় গিয়ে ইজারাদারের কোনো লোক পাওয়া যায়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে তাঁদের দেখা যাচ্ছে না বলে স্থানীয়রা জানান।
সীমা সিনেমা হলের মোড়ে কথা হয় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক আজিজ আহমেদের সঙ্গে। তিনি জানান, সিএনজি নিয়ে পৌর এলাকার ভেতরে প্রবেশের মুখে বা বের হতে তাঁদের কাছ থেকে টোলের নামে ২৫ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হতো। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের চাঁদা দিতে হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য একাধিকবার মেয়র গোলাম কবিরের মুঠোফোনে ফোন দিলেও তিনি ফোন না ধরায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
তবে ইউএনও হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, ‘ধামরাই পৌর এলাকায় কোনো পার্কিং বা টার্মিনাল নেই। এরপরেও পৌরসভা থেকে পার্কিংয়ের জন্য যানবাহন থেকে টোল আদায়ের ইজারা দেওয়া হতো। আর ইজারা নিয়ে টোলের নামে অবৈধভাবে যানবাহন থেকে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হতো।’