নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে বাধা ও লাঠিপেটার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ বিরুদ্ধে। ধাওয়ার মুখে বেশ কয়েকবার ছত্রভঙ্গ হলেও শিক্ষার্থীরা একাধিকবার সংগঠিত হয়ে কর্মসূচি পালনের চেষ্টা করে। এ সময় আন্দোলনকারীরা তর্কে জড়ায় পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া শহীদ মিনার এবং বালুর মাঠ সড়কে এ ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এক ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা বিরাজ করছিল। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধু সড়কে মিছিল করে কর্মসূচি সমাপ্ত করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্ধ্যা ৬টা থেকেই শহীদ মিনারে জড়ো হতে শুরু করে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলকে। তিনি একজন অভিভাবক হিসেবে নিজের সন্তানকে নিয়ে হাজির হয়েছেন বলে জানান।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলেন। শিক্ষার্থীরা অনুরোধ করলেও তাদের অনুরোধ না রেখে পুলিশ ধাওয়া দেয়। পরে শহীদ মিনারের গেটে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে এর প্রতিবাদ জানাতে থাকে। শহীদ মিনারের ভেতর ফের প্রবেশের চেষ্টা করলে বাধা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের।
সন্ধ্যায় পৌনে ৭টার দিকে শিক্ষার্থীরা শহরের বালুর মাঠ সড়ক দিয়ে মিছিল বের করে। সঙ্গে সঙ্গেই পেছন থেকে তাদের ধাওয়া দেয় পুলিশ। ধাওয়ার মুখে শিক্ষার্থীরা বালুর মাঠ সড়কের ইসলাম হার্ট সেন্টারের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে দাঁড়িয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায় কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী। জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন একজন করে ধরে নেওয়ার চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে ছেড়ে দেয় পুলিশ। এ সময় কয়েকজনকে লাঠিপেটা করে পুলিশ।
কর্মসূচির বিষয়ে সুজনের জেলা সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল বলেন, ‘আজকে শিক্ষার্থীরা নিহত শহীদদের স্মরণ করে মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয়। আমরা পুলিশকে একাধিকবার অনুরোধ করেছি আমাদের শান্তিপূর্ণ ভাবে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়ার জন্য। কিন্তু তারা নিরীহ নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের সামনে দাঙ্গা পুলিশ এনে মুখোমুখি করেছে। আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই।’
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচির বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা মোমবাতি প্রজ্বালন, মশাল মিছিল, বিক্ষোভ মিছিল করবে এমন তথ্য ছিল। তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাদের লাঠিপেটা করা হয়নি।’