ঢাবি প্রতিনিধি
কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের মোর্চা—বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ‘রিমেম্বার দ্য হিরোস’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এই কর্মসূচি পালন করবে তারা।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে, নির্যাতনের ভয়ংকর দিন-রাতগুলোর স্মৃতিচারণা; শহীদ ও আহতদের নিয়ে পরিবার এবং সহপাঠীদের স্মৃতিচারণা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হওয়া নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে চিত্রাঙ্কন, দেয়াল লিখন, ফেস্টুন তৈরি, ডিজিটাল পোট্রের্ট তৈরি করে শহীদদের স্মরণে ওপরের যেকোনো কনটেন্ট বা লেখা লিখে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে অনলাইনে ও অফলাইনে প্রচার করা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহসমন্বয়ক রিফাত রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আজ এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা-মামলা, গুম-খুন ও শিক্ষকদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে, জাতিসংঘ কর্তৃক তদন্তপূর্বক বিচারের দাবিতে এবং ছাত্র সমাজের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রিমেম্বার দ্য হিরোস কর্মসূচি ঘোষণা করছে।’
এমন ‘ভয়ানক অন্ধকার’ পরিস্থিতিতে সারা দেশে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, ব্যবসায়ীসহ সব শ্রেণি–পেশার মানুষের প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি পালনে সর্বাত্মক অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের কালো ছায়ায় আচ্ছন্ন। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সরকার এই দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর রাষ্ট্রযন্ত্র, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনী ও তাদের দলের সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে বর্বর গণহত্যা চালিয়েছে। আমাদের ঝলমলে দিনগুলো আজ অন্ধকারে ছেয়ে গেছে। রাতগুলো হয়ে গেছে গণগ্রেপ্তারের আতঙ্কে আরও অন্ধকার। সরকার ও তার মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও যৌথ বাহিনীর মধ্যযুগীয় বর্বরতায় শাহাদত বরণ করেছে শিশুসহ শত শত সাধারণ নাগরিক। চলছে রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানাদার বাহিনীর কায়দায় গণগ্রেপ্তার, সেই সঙ্গে চলছে গ্রেপ্তার–বাণিজ্য।
‘সাধারণ শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের রাস্তায় ধরে মোবাইল চেক, হয়রানির ও নির্বিচার গ্রেপ্তারের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিদিনের চিত্র। এ ছাড়াও আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ।
‘এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষিকা শেহরীন আমিন ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। আমরা এসকল ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
একটি স্বাধীন দেশে এমন নজিরবিহীন মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।