মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
যশোরের মনিরামপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নারী সদস্যের নামে সরকারি তিনটি বিশেষ সুবিধার কার্ড নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে, তিনি একাধারে বিধবা ভাতা, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ও টিসিবির পণ্যের কার্ডের সুবিধা নিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় তিনি একসঙ্গে সরকারি তিনটি কার্ডের সুবিধা ভোগ করছেন। তবে চেয়ারম্যানের দাবি, বিষয়টি তিনি জানেন না।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম পারভিনা খাতুন। তিনি কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের (৪,৫ ও ৬) নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য এবং হুমাতলা গ্রামের মৃত তাইজুল ইসলামের স্ত্রী।
কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তৌহিদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার বিষয়ে আনা অভিযোগ সত্য না। পারভিনা খাতুনের নামে একাধিক কার্ডের বিষয়ে আমার জানা ছিল না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি। এখন একটা ব্যবস্থা নিতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পারভিনা খাতুন ২০২১ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের (৪,৫ ও ৬) নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন। তাঁর একমাত্র ছেলে প্রবাসে থাকেন।
স্বামী মারা যাওয়ায় কয়েক বছর পরে পারভিনা খাতুনের নামে বিধবার ভাতার একটি কার্ড হয়। এরপর চালের কার্ড হয় তাঁর নামে। গেল বছরের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চালের কার্ড যাচাই–বাছাই করা হয়েছে। চালের কার্ড যাচায়ের সময় উপজেলা কমিটির নির্দেশনা ছিল, কোনো ব্যক্তি সরকারি কোনো একটি সহায়তা পেলে তিনি চালের কার্ডের সুবিধা পাবেন না।
এ ক্ষেত্রে কার্ড সংশোধন করে অন্য নামে দিতে হবে। কিন্তু চেয়ারম্যান পারভিনা খাতুনের নাম বাদ না দিয়ে নতুনভাবে তাঁর নাম যুক্ত করেন। চালের কার্ডের নতুন তালিকায় স্বামীর নাম না দিয়ে তাঁর বাবার নাম ব্যবহার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পারভিনা খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার স্বামী মারা গেছে ২০১৩ সালে। বিধবা ভাতা ও চালের কার্ড আমি মেম্বর হওয়ার আগের। আর টিসিবির কার্ড মেম্বর হওয়ার পরে হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, মেম্বর হিসেবে আমরা মাসিক ভাতার পরিষদের অংশ পাই না। শুধু সরকারি ভাতা ৩ হাজার ৬০০ টাকা পাই। আর টিসিবির কার্ড আমি জোর করে নিয়েছি। যাচাই–বাছাই করার সময় চালের কার্ড কেটে দিতে চাচ্ছিল। আমি বলেছি, ছেলেটা বিদেশে গেছে। আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে কার্ড ফেরত দেব।’
কাশিমনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি কোনো কার্ড দিইনি। যে কোনো কার্ড হওয়ার সময় নারী ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের আলাদা অংশ থাকে। সেভাবে পারভিনা খাতুনের নামে কার্ড হয়েছে।’
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘অভিযোগের সত্যতা পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।`