কাজীপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে পারিবারিক দ্বন্দ্বে উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে মারধর ও অ্যাসিড নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাঁকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে প্রতিপক্ষের লোকজন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। এ দিকে আগুনে পুড়ে গেছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আগুন দিয়ে আসবাবপত্র ও প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার ওষুধ।
গতকাল সোমবার দিবাগত গভীর রাতে উপজেলার চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়ন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। আহত উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হলেন মনিরুজ্জামান (৩৮)।
আজ মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, চালিতাডাঙ্গার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির ভেতরের আসবাবপত্র ভাঙচুর অবস্থায় এলোমেলো হয়ে পড়ে আছে। পুড়ে ছাই হয়ে আছে ওষুধ। ঘরের মেঝেতে রক্তের ছাপ।
স্থানীয়রা বলছে, উপজেলার চালিতাডাঙ্গা উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মনিরুজ্জামান। পাশাপাশি তিনি মা-বোনকে নিয়ে কর্মস্থলে থাকতেন। মনিরুজ্জামানের বাড়ি নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিক্রি দোরতা গ্রামে। সোমবার রাতে হাসপাতালে আগুন দেখে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন স্থানীয়রা। ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ও মনিরুজ্জামানকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কাজীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি।
এ বিষয়ে আহত মনিরুজ্জামানের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ধান কাটা মৌসুম চলায় মা-বোন চরের বাড়িতে ছিল। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরে আমি একা ছিলাম। গভীর রাতে ঘুমের মধ্যে আমাকে গলা টিপে ধরে ও আঠা দিয়ে মুখ আটকে দেয়। এ অবস্থায় মারতে মারতে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যায় আমাকে। আমার পিঠে অ্যাসিড ঢেলে দেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি অজ্ঞান হওয়ার আগে আমার ভাই চর দোরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বাবলুসহ কয়েকজনকে চিনতে পারি। আমি কার কাছে বিচার চাইব! আমি কোনো বিচার পাই না। ওরা আমাকে মেরেই ফেলবে।’
এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চর দোরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বাবলুর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলে তিনি কেটে দেন।
এ বিষয়ে কাজীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোমেনা পারভীন পারুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্টোররুমসহ দুটি কক্ষের আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে। স্টোরে রাখা প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকার ওষুধ পুড়ে ছাই হয়েছে। মনিরুজ্জামান সুস্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাজীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’