নওগাঁ প্রতিনিধি
১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও এর দুই দিন পর মুক্তির স্বাদ পান নওগাঁবাসী। অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় নওগাঁ। এদিন প্রায় দুই হাজার পাকিস্তানি সেনা নওগাঁয় যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে।
নওগাঁয় বিভিন্ন জায়গায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিযোদ্ধা গোলাম সামদানী বলেন, ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তানি সেনাদের আত্মসমর্পণের খবর পেয়ে জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে নওগাঁকে মুক্ত করার প্রস্তুতি নেন মুক্তিবাহিনীর স্থানীয় কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরী। সে অনুযায়ী পরদিন ভোরে তাঁর নেতৃত্বে নওগাঁ শহরের দিকে এগোয় প্রায় সাড়ে তিন শ বীর মুক্তিযোদ্ধা। সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে রাত পর্যন্ত চলে সম্মুখ যুদ্ধ। দুর্বল হয়ে পড়ে হানাদাররা।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হারুন অল রশিদ বলেন, ‘১৬ থেকে ১৮ ডিসেম্বর আমাদের কাছে ছিল খুবই ভয়াবহ। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বোঝা যাচ্ছিল না কোথায় কী হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ১৮ ডিসেম্বর বগুড়া থেকে ভারতের মেজর চন্দ্র শেখর ও তার দল এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে পি বি রায়ের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী নওগাঁয় প্রবেশ করে। তখন চূড়ান্ত হার মানে হানাদার বাহিনী। সেদিন সকাল ১০টার দিকে প্রায় দুই হাজার পাকিস্তানি সেনা শহরে রাস্তার দু পাশে অস্ত্র রেখে আত্মসমর্পণ করেন। এসডিও অফিস চত্বরে ওড়ে স্বাধীন বাংলার পতাকা।’
দিবসটি উপলক্ষে আজ সোমবার জেলায় বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। এর মধ্যে সকাল ১১টায় শহরের এটিম মাঠে লাঠিখেলা হবে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজক স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ।
সংগঠনটির সভাপতি ডিএম আব্দুল বারী বলেন, ‘প্রতি বছর নওগাঁ হানাদার মুক্ত দিবস উদ্যাপন করি আমরা। এ বছরও লাঠিখেলাসহ বিভিন্ন আয়োজন করা হয়েছে।’