মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর মান্দায় আমানতকারীদের পাওনা প্রায় ১ কোটি টাকা পরিশোধ না করেই এনজিও কার্যক্রম গুটিয়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগে সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে উপজেলার কশব ইউনিয়নের পলাশবাড়ি বাজার থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ সোমবার কশব গ্রামের ভুক্তভোগী এক গ্রাহক পদ্মা এন্টারপ্রাইজ নামের ওই বেসরকারি এনজিও সংস্থার তিন কর্মীর বিরুদ্ধে মান্দা থানায় মামলা করেন। গ্রেপ্তার এনজিওকর্মীরা হলেন—মান্দা উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামের মতিউর রহমান (৩১), নওগাঁ সদর উপজেলার কনকই গ্রামের শরিফ সরদার (৩১) ও বেনিফতেপুর গ্রামের আব্দুল বারিক (২৮)।
মামলার বাদী আব্দুর রশিদ বলেন, পদ্মা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি সংস্থা ২০২১ সালে পলাশবাড়ি বাজারে শাখা কার্যালয় খুলে সদস্যদের মধ্যে ঋণ বিতরণ শুরু করে। পরে স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলো শাখাটির কর্মীরা। এর পর ১ লাখ টাকায় প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা মুনাফার প্রলোভন দিয়ে তাদের প্রলুব্ধ করা হয়।
ভুক্তভোগী গ্রাহক আব্দুর রশিদ আরও বলেন, ‘এনজিওকর্মীদের প্রলোভনে আমি তিন দফায় ওই সংস্থায় ৫ লাখ টাকা জমা দিই। কয়েক মাস মুনাফার টাকা যথাসময়ে পরিশোধ করা হয়েছে। এর পর থেকে টালবাহানা শুরু করে।’
তারা বানু নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘আমি ওই সংস্থায় ১ লাখ টাকা জমা রেখেছি। ১০ মাস আমাকে সঠিকভাবে মুনাফা দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করেই ১ আগস্ট থেকে কার্যালয়টি তালাবদ্ধ করে গা ঢাকা দেন এর কর্মীরা। রোববার রাতে গোপনে কার্যালয়টি খুলে ভেতর থেকে কাগজপত্র নিয়ে সটকে পড়ার চেষ্টা করে সংস্থার কর্মীরা। জানতে পেরে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রাহক বলেন, ওই সংস্থায় ৪০ জন গ্রাহকের জমা আছে ৮৫ লাখ টাকা। বেশ কিছু গ্রাহকের এফডিআর রয়েছে আরও অন্তত ১২ লাখ টাকা। এসব টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যেই এনজিওকর্মীরা রাতারাতি সটকে পড়ার চেষ্টা করে। জানতে পেরে তাদের আটক করে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক কাজী বলেন, রোববার গভীর রাতে তিন এনজিওকর্মীকে থানায় হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী। ঘটনায় ভুক্তভোগী এক গ্রাহক মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে তাদের নওগাঁ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।