হোম > সারা দেশ > রংপুর

ঠাকুরগাঁওয়ের বাঁশ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে

প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও

আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২১, ২৩: ৪৭

ঠাকুরগাঁওয়ের বাঁশ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন হাট বাজার ও গ্রাম থেকে বাঁশ কিনে তা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন ব্যাপারীরা। জেলার পতিত ও কম ফলনশীল কৃষি জমিতে বাঁশের ভালো ফলন হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত চাহিদা থাকায় বাঁশ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন কৃষকেরা। এতে স্বল্প খরচে অধিক লাভের মুখ দেখছেন তাঁরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার পাঁচটি উপজেলার প্রায় জায়গাতেই প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা প্রচুর বাঁশের বাগান রয়েছে। এ ছাড়াও বসতবাড়ির আশপাশ এবং পরিত্যক্ত জঙ্গল ও ভিটায় বাঁশ লাগিয়েছেন কৃষকেরা। 

শনিবার সদর উপজেলার সালন্দর সিংপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুজন ব্যবসায়ী কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে ট্রাকে বাঁশ তুলছেন। কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। তাঁরা জানান, এই বাঁশের ট্রাকটি গোপালগঞ্জ জেলায় পাঠাবেন। ট্রাকটিতে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বাঁশ পাঠানো হচ্ছে। বাগানে শ্রমিক দিয়ে প্রতি পিচ বাঁশ কেটে নেওয়ার জন্য ৩০-৩৫ টাকা দেওয়া হয়। পরে ভ্যানে করে ফাঁকা স্থানে ট্রাক ভিড়িয়ে সেখানে প্রতি পিচ ৩-১০ টাকায় ট্রাকে উঠিয়ে দেন শ্রমিকেরা। এতে করে এই এলাকার বেকারদের জন্য কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হচ্ছে বলে জানান তাঁরা। 

সদর উপজেলার সালন্দর পাবনাপাড়া গ্রামের বাঁশ ব্যবসায়ী আমজাদ আলী ও সানোয়ার আলী জানান, তাঁরা দুটি ট্রাকে করে ২ লাখ টাকার বাঁশ কিনে সিলেটে পাঠাচ্ছেন। তবে এবার লকডাউনের কারণে ট্রাক ভাড়া বেশি দিতে হচ্ছে। যেখানে আগে ৩০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হতো এবার তা বেড়ে ৪০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। বাঁশ কেনা ও পরিবহন খরচ বাদ দিলে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকার মতো লাভ হবে তাঁদের। তবে কোন কোন সময় লোকসানও গুনতে হয় বলে জানান তাঁরা। 

স্থানীয় সিংহজানি গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, এলাকায় তেমন বড় কোন বাঁশের হাট নেই। তবে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ব্যবসায়ীরা বাঁশ কিনে নিয়ে যান। সপ্তাহে ২ থেকে ৩ লাখ টাকার বাঁশ এ গ্রাম থেকে কেনা বেচা হয়ে থাকে। 

বেগুনবাড়ি এলাকার ধন্দোগাঁও গ্রামের কৃষক মুসলিম উদ্দিন বলেন, তিনি নদীর ধারে ও বাড়ির পাশে প্রায় ৬ একর জমিতে বাঁশ লাগিয়েছেন। গ্রাহকেরা নিজে থেকেই খোঁজ নিয়ে বাঁশ কিনতে চলে আসেন। এ বছর ২ লাখ টাকার মতো বাঁশ বিক্রি করেছেন। এতে তাঁর কোন খরচ ছাড়া পুরোটাই লাভ বলে জানান তিনি। গাঙ্গর এলাকার দীনেশ রায় বলেন, আমাদের এ গ্রামে প্রচুর বাঁশের বাগান রয়েছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাঁশ নিয়ে যেতে পাইকারি ক্রেতারা এ গ্রামে আসেন। এলাকার বাঁশের চাষিরা তাই বেশ লাভবান হচ্ছেন। 

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আবু হোসেন বলেন, বাঁশ চাষ একটি অর্থকরী বিষয়। জেলার কৃষকেরা কিছুটা কম উৎপাদনশীল বা কম উর্বর জমিতে বাঁশ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ ছাড়াও বাঁশ অন্যান্য গাছ পালার চেয়ে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন উৎপন্ন করে এবং বেশি মাত্রায় কার্বন ড্রাই-অক্সাইড নেয়। বাঁশের রোগ বালাই কম হওয়াতে কৃষকদের কীটনাশ বা সার দিতে হয় না। তবে ছত্রাক জনিত কারণে বাঁশের কিছুটা ক্ষতি হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বিভিন্ন ভাবে উদ্বুদ্ধকরণসহ পরামর্শ সহযোগিতা দিয়ে আসছেন। 

ঠাকুরগাঁওয়ে মা-বাবার কবর জিয়ারত করলেন মির্জা ফখরুল

‘শেখ হাসিনার মূলনীতি’ রসিকের সেবায় ভোগান্তি

মতবিনিময় সভায় মুজিব বর্ষের লোগো, নেসকোর ৩ কর্মকর্তা বদলি

সীমান্তে আটকের ২৪ ঘণ্টা পর সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে ফেরত দিল বিএসএফ

সেকশন