ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে সিলেটে নদ-নদীর পানি বেড়ে তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে এবং ইতিমধ্যে চারটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতে ডুবেছে নগরের বেশ কয়েকটি এলাকা। পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সিলেটের তিনটি নদীর ছয়টি পয়েন্টে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের (আইএমডি) ওয়েবসাইট থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) চেরাপুঞ্জিতে ১৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর এর আগের দিন ৩১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, যার কারণে বাংলাদেশের বিভিন্ন নদ-নদীর মাধ্যমে প্রবেশ করে সিলেটে পানি বাড়ছে। এ ছাড়া আগামী তিন দিনে ৩০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) সিলেটে ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, সিলেটের কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্ট, সুরমা নদীর একটি ও সারি-গোয়াইন নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৭ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারার অমলশীদ পয়েন্টে ৭৭ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ২৩ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৯৫ সেন্টিমিটার, শেরপুর পয়েন্টে ১৪ সেন্টিমিটার ও সারি-গোয়াইন নদীর গোয়াইনঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আর সময়ের সঙ্গে বাড়ছে সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টের পানি। বিপৎসীমা থেকে মাত্র ১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সিলেট পয়েন্টে পানি। এর আগে সোমবার সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানিতে আবারও নগরের বেশ কয়েকটি এলাকা তলিয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের তালতলা, উপশহরে বেশ কয়েকটি ব্লক, যতরপুর, ঘাসিটুলা, শামীমাবাদ ও মাছিমপুর এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, সিলেট ও চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশে সিলেটের নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে পূর্বের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যাবে।
এ ছাড়া ৫৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮১টি পরিবার ও ২৯টি গবাদি পশু আশ্রয় নিয়েছে।
কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা নাসরীন বলেন, ‘কানাইঘাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পৌর শহর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। আমরা প্রস্তুত রয়েছি। এখনো পর্যন্ত কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠেননি।’