নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চারটি মামলায় জামিন পেয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। আসামিপক্ষের আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারক স্বপন কুমার সরকার এ রায় দেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা ও বিস্ফোরক এবং সাবেক রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক—এই চার মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হয়।
ট্রাইব্যুনালের পিপি সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আসামিপক্ষ জামিন আবেদন করলে আমরা বিরোধিতা করেছি। বিজ্ঞ আদালত জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী শহিদুজ্জামান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা জামিনের আবেদন করেছিলাম। ওই দিন হবিগঞ্জের সাবেক মেয়র জি কে গৌছসহ কারাগারে থাকা আসামিরা উপস্থিত ছিলেন। শুধু শারীরিক অসুস্থতায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবর ও জরুরি কাজে ঢাকায় থাকায় সিলেটের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন না।
‘শুনানি শেষে ১১ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ বুধবার আরও শুনানি ও আদেশের জন্য রেখে দিয়েছিলেন আদালত। আজ বিজ্ঞ বিচারক চারটি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেছেন। আমরা আগামী রোববার আদালতে ব্রেইল বন্ড জমা দেব।’
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। এ ঘটনায় তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ বিএনপির বেশ কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে ২০০৪ সালের ২১ জুন সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে রাজনৈতিক সমাবেশে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বোমা হামলায় এক যুবলীগ কর্মী নিহত ও ২৯ জন আহত হন। ওই ঘটনায় এসআই হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ বাবর, আরিফুল, গৌছসহ ১১ জনকে অভিযুক্ত আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন লুৎফুজ্জামান বাবর। এরপর ২০০৭ সালে সেনা–সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও চট্টগ্রামের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।