পুলিশি নিরাপত্তায় হেলিকপ্টারে করে একাধিক মামলার আসামি সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেট থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাঁকে এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা পুলিশের কেউ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও সিলেট জেলা পুলিশের দুজন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া গতকাল সোমবার পুলিশ সুপার, ডিএসবি, সিলেট স্বাক্ষরিত আদেশে (স্মারক নম্বর-৪২৯২) বিচারপতি মানিককে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় প্রেরণের নির্দেশনা দিয়ে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব বণ্টন করা হয়।
তাতে কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অলক শর্মা ও এসএএফ পুলিশ লাইনস সিলেটের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল হাইকে হেলিকপ্টারে বিচারপতি মানিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
আদেশে আরও বলা হয়, পুলিশি এই নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক তদারকি করবেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. রফিকুল ইসলাম ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার সার্বিক দায়িত্বে থাকবেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান।
এবিষয়ে জানতে চাইলে দুজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেছেন। আর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সিলেট আদালতের পরিদর্শক জমসেদ আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য মানিককে আদালতে তোলা হয়। গ্রেপ্তার দেখানোর পর জামিনযোগ্য অপরাধ হওয়ায় আদালত তাঁকে এই মামলায় জামিন দিলেও অন্যান্য মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। হত্যাসহ গুরুতর অপরাধে সহযোগিতায় ঢাকার পাঁচটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ঢাকার আদালতে হাজির করার জন্য তাঁকে আজকালের মধ্যে কেরানীগঞ্জের কারাগারে স্থানান্তর করা হবে।’
এর আগে এর আগে আজ সকাল ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। কানাইঘাট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টার মামলায় অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন। তবে দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যাসহ একাধিক মামলার পাঁচটিতে মানিককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে ঢাকার আদালতে হাজির করার নির্দেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।
২৪ আগস্ট সিলেট আদালতে ঢোকার সময় আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ জনতা শামসুদ্দিন মানিককে কিল-ঘুষি-লাথি মারেন। এ সময় তিনি অণ্ডকোষে গুরুতর আঘাত পান। অনেকে ডিম ছোড়ার পাশাপাশি জুতাও নিক্ষেপ করে। আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওসমানীতে তাঁর শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়।
গত ১২ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে মানিককে ছাড়পত্র দেয় সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তে ওই দিন দুপুরে তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। পরে কড়া নিরাপত্তা ও সতর্কতার সঙ্গে হাসপাতাল থেকে তাঁকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।