সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, সেবক নির্বাচিত করলে প্রথম কাজ হবে নগরবাসীকে নিয়ে পরিকল্পিত উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ; শহরটাকে গ্রিন এবং ক্লিন করা। জননেত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট নগরী হবে পুণ্যভূমি সিলেট।
আজ শনিবার সিসিক নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নাম ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। এরপরই তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আজকের পত্রিকাকে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিকে নিজ দল নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় বিপাকে পড়েছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে এখনো পর্যন্ত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আশা ছাড়েননি বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। নগরে আলোচনা চলছে দল থেকে পদত্যাগ করে নাগরিক কমিটির ব্যানারে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হবেন আরিফুল হক চৌধুরী। প্রার্থী হলে তাঁর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঘোষণার পর তাঁর প্রক্রিয়া জানতে চাইলে লন্ডনে অবস্থানরত আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘ক্রিয়া থাকলে না প্রক্রিয়া হবে। তাঁরা ঘোষণা দেয়নি কেন? আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র। এখন তাঁরা প্রার্থী ঘোষণা করেছেন, অথচ আগেই তাঁকে মেয়র হিসেবে অভিনন্দন দেওয়া হয়ে গেছে। উন্নয়ন পরিকল্পিত না অপরিকল্পিত তা আমার নগরবাসী বিচার করবেন। একটু পরে লন্ডন থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বিমানে উঠব, দেশে ফিরেই সবকিছু জানাব।’
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মতো বৃহৎ রাজনৈতিক দলের সিলেট সিটির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় মনোনয়ন পেয়েছি, অবশ্যই আমি আনন্দিত। এখন দলমত সবাইকে নিয়ে, বিশেষ করে আমার দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে নিয়ে তাঁদের পরামর্শে কাজ করব।’
একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশীর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বড় দল, প্রতিযোগিতা থাকবে। কোন্দল-বিভক্তির কিছু নেই, এটা ইতিবাচক প্রতিযোগিতা। তবে সিলেট আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ, জেলা-মহানগর ও মেয়র পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাই আমাকে ইতিমধ্যেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাঁরা সকলেই জননেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে খুশি এবং নৌকার বিজয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। আজ মনোনয়ন ঘোষণার পরপরই নগরে সহযোগী অঙ্গ-সংগঠনের সকল নেতা-কর্মীরা মিছিলও করেছেন বলে খবর পেয়েছি।’
আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে নগরের অলি-গলিতে চষে বেরিয়েছি। নগরে অপরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে। আমাকে সেবক নির্বাচিত করলে নির্বাচনের পর প্রথম কাজ হবে নগরবাসীকে নিয়ে পরিকল্পিত উন্নয়নের পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি শহরটা গ্রিন এবং ক্লিন করা। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট নগরী হবে পুণ্যভূমি সিলেট। প্রবাস জীবনসহ সকল অভিজ্ঞাকে কাজে লাগানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। দেশের সবচেয়ে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাজশাহী নগরীকেও ছাড়িয়ে যাব আমরা। পুণ্যভূমির শব্দের সকল বৈশিষ্ট্য থাকবে সিলেট নগরে।’
১৯৭০ সালের ১ জুন সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বুরুঙ্গাঁ বাজার ইউনিয়নের পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। বাবা নৌশা মিয়া চৌধুরী এবং মা মোছা. গহিনুন্নেছা চৌধুরী। যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী ৬ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট আনোয়ারুজ্জামান। ছোট বেলায় বাবাকে হারানো আনোয়ারুজ্জামান স্কুল জীবনে বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের (মো. আব্দাল মিয়া-আব্দুল মতিন কমিটি) সমাজসেবা সম্পাদক মনোনীত হন। সিলেট সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগ থেকে ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক পদে নির্বাচন করেন। ১৯৯০ সালের শেষের দিকে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেখানে গিয়ে প্রথমে যুক্তরাজ্য যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্যের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১১ সালে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন।