নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
তখন ফাইজার বয়স তখন পাঁচ বছর। চোখের সামনেই তার মাকে খুন করেন বাবা মনির আলী। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও ফাইজা (৯)। চার বছর পর সেই মেয়ের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে মৃত্যুদণ্ড হলো বাবা মনির আলীর (৪০)।
আজ বুধবার সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. শাহাদাৎ হোসেন প্রামাণিক এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া মনির আলী সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের বাসিন্দা। একই সঙ্গে এই ঘটনায় তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মামলায় ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এর মধ্যে একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী হিসেবে নিহত শাহানার মেয়ে ফাইজা সাক্ষ্য দিয়েছেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন।’
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ৫ জুন যোহরের নামাজরত অবস্থায় স্ত্রী সাহানা আক্তারকে কুপিয়ে হত্যা করেন মনির। শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে অবস্থান করে স্ত্রীকে হত্যার এ দৃশ্য তার ৫ বছর বয়সী কন্যা দেখে ফেলে। ২০২২ সালে ৯ বছর বয়সে আদালতে বাবার বিরুদ্ধে ওই শিশু সাক্ষ্যও দেয়। এর আগে ঘটনার পর পাঁচ বছর বয়সী ফাইজা পুলিশের কাছে খুনের বর্ণনা দেয়। ফাইজার বর্ণনার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে আদালতে দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দেন মনির।
অ্যাডভোকেট সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আবদাল বলেন, ‘দক্ষিণ সুরমার লাউয়াই উমরকবুল গ্রামে স্ত্রী সাহানার বাবার বাড়িতে থাকতেন মনির আলী। ঘরজামাই হিসেবে বসবাস করার পরও যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে প্রায়ই চাপ দিতেন। টাকার জন্যই তাকে নামাজরত অবস্থায় কুপিয়ে খুন করেন মনির। খুনের দৃশ্য তাদের একমাত্র মেয়ে ফাইজা দেখে ফেলে।’
তিনি আরও জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাহানার ভাই পারভেজ আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। তদন্ত কর্মকর্তা জগত জ্যোতি দাস ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর একমাত্র মনিরকে অভিযুক্ত করে আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। গত বছর মামলাটি আদালতে বিচারের জন্য দায়রা ৬৫৮ / ২২ মূলে রেকর্ড করা হয়। গত বছরের ২৫ মে আদালতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু হয়।