হোম > অর্থনীতি

রাজস্ব সংগ্রহের গতি অস্বাভাবিক কম

 আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা

ফাইল ছবি

রাজস্ব সংগ্রহের গতি একটি দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের মূল সূচক হিসেবে কাজ করে। এই গতি, যা সরাসরি সরকারের অর্থনৈতিক সক্ষমতা এবং পরিকল্পনাগুলোর বাস্তবায়ন ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত। বিদ্যমান অর্থনীতিতে যদি প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না করতে পারে, তবে তা একদিকে যেমন আর্থিক ব্যবস্থার অস্থিতিশীলতার সংকেত দেয়, তেমনি অন্যদিকে দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যেও গভীর চ্যালেঞ্জের সৃষ্টি করে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে আমরা এমনই এক কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি, যেখানে নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫৮ হাজার কোটি টাকার বিশাল ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারের রাজস্ব সংগ্রহের বড় কাজটি করে থাকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে—জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত—লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ১৪ হাজার ১৪৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। সংস্থাটির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ সময়ের মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪১৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ফলে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫৭ হাজার ৭২৩ কোটি ৬১ লাখ টাকা, অর্থাৎ ২৬ দশমিক ৯৫ শতাংশ কম রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে।

এ ছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ বছর সেই তুলনায় ১ হাজার ৫৬৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা কম আদায় হয়েছে। অর্থাৎ, রাজস্ব সংগ্রহে ১ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাস্তবতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ লক্ষ্যমাত্রা, জুলাই ও আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবৃদ্ধি হ্রাসের মতো কারণগুলো রাজস্ব আদায়ে এই ঘাটতির জন্য দায়ী। যদিও অর্থনীতিবিদেরা বিষয়টিকে কিছুটা স্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন। কারণ বিদ্যমান পরিস্থিতি রাজস্ব সংগ্রহে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।

এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, ডলারের দাম বাড়ায় আমদানি ও উৎপাদন খরচ বেড়ে ব্যবসায় প্রভাব পড়েছে। এ ছাড়া জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কর্মকাণ্ড স্থবির ছিল এবং বড় প্রকল্পে অর্থছাড় কমায় রাজস্ব আদায়ও কমেছে। তবে লক্ষ্যে ঘাটতি হলেও গত অক্টোবর থেকে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা গতি বেড়েছে। সর্বশেষ ডিসেম্বরে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আদায় বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, অর্থবছরের শুরুতেই দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু হওয়ায় সে সময়টি অস্থিতিশীল ছিল। এর ফলে রাজস্ব আদায় কম হওয়া স্বাভাবিক।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই ঘাটতি তাৎক্ষণিকভাবে মেটানো সম্ভব নয়, তবে প্রত্যক্ষ কর বাড়ানো, ফাঁকি রোধ এবং ভ্যাট সংগ্রহের ঘাটতিগুলো দূর করতে হবে। এর জন্য রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি করজাল সম্প্রসারণ এবং ডিজিটালাইজেশনের দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।

এবিআরের তথ্য বলছে, আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও কাস্টমস—এই তিন খাতের মধ্যে ভ্যাটের প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। আয়কর খাতে ৬ মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৬ হাজার ৬৮ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৫২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩১ শতাংশ কম। তবে গত বছরের তুলনায় এই খাতে ২ দশমিক ৫৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

অপর দিকে কাস্টমস খাতে প্রথমার্ধে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬১ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা, আদায় হয়েছে ৪৯ হাজার ৮০ কোটি টাকা, যা ২০ দশমিক ৭৭ শতাংশ কম। গত বছরের তুলনায় এই খাতে প্রবৃদ্ধি মাত্র শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের প্রাক্কলন করা হয় ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা, যা জিডিপির ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি এবং অন্যান্য উৎস থেকে ৬১ হাজার কোটি টাকা।

কড়া বার্তা দিয়ে সরল কেন্দ্রীয় ব্যাংক

অর্থনীতির সুরক্ষায় প্রয়োজন দ্রুত রাজনৈতিক সরকার

প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যে বর্ধিত মূসক-শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি, আশ্বাস এনবিআরের

শেকৃবি ও ডিএআই গ্লোবালের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর

‘এলজি ওলেড ইভো সি-৪’ সিরিজের টিভি বাজারে আনল র‍্যাংগস ইলেকট্রনিকস

বাস, বিমান ও ট্রেনের টিকিট বুকিংয়ে বিকাশ পেমেন্টে মিলছে ক্যাশব্যাক

ট্রাস্ট ব্যাংকের জন্য ৪৫০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যু ইউসিবি ইনভেস্টমেন্টের

আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শিক্ষা আইনের খসড়া প্রস্তাবের ওপর মতবিনিময় সভা

আইডিএলসি ফাইন্যান্সে যাত্রা শুরু করল ‘আইডিএলসি ইসলামিক’

বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দর নির্মাণে আগ্রহী ডিপি ওয়ার্ল্ড ও এপি মোলার-মেয়ার্স্ক

সেকশন