হোম > অপরাধ > সিলেট

অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে বরখাস্ত করার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা: সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপারকে সাময়িক বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ বুধবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দিয়েছেন।

গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না-হাইকোর্টের এই রুল আংশিক মঞ্জুর করে এই রায় দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রায়ের তারিখ ধার্য করেছিলেন আদালত।

রায়ে আরও বলা হয়েছে, কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এমসি কলেজের হোস্টেলে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। এই দায় কলেজের অধ্যক্ষ ও হোস্টেল সুপার এড়াতে পারেন না। তাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আদালত মনে করেন। আদালত হোস্টেল সুপার ও অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এর আগে ২০২০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই ঘটনার অনুসন্ধানে যৌথ কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। চার সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিতে ছিলেন—সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা।

পরে এই অনুসন্ধান কমিটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, সিলেটের এমসি কলেজে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল। তাই প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে এমসি কলেজের অধ্যক্ষও কোনোভাবেই ওই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না। ধর্ষণের পেছনে মূলত হোস্টেলের বর্তমান তত্ত্বাবধায়কেরা, হোস্টেলের মূল গেটের ডে-গার্ড, ৫ নম্বর ব্লকের ডে-গার্ড ও নাইট গার্ড (নৈশ প্রহরী) এবং ৭ নম্বর ব্লকের ডে-গার্ড ও নাইট গার্ডের দায়িত্বে অবহেলা ছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও সাবেক ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন। সাবেক ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজের হোস্টেল দখল করে রাখা ও সাবেক ছাত্র সাইফুর রহমান কর্তৃক হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তারা কলেজের হোস্টেল এলাকায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পায়। ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।

পাশাপাশি এই প্রতিবেদনে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ১৫ দফা সুপারিশ করে বলা হয়, কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা সাবেক ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক তরুণী। এ সময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই তরুণীকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে এবং গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। সেদিন রাতেই ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে শাহপরান থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহার নামীয় আসামি করা হয়েছে ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২ / ৩ জনকে আসামি করা হয়।

আসামিরা হলো− এম. সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই ঘটনাটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর তা হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন। প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে হাইকোর্ট রুল জারির পাশাপাশি যৌথ অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে দেন। উল্লেখ্য, শিক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, আইনসচিব, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ, হোস্টেল সুপারকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল। এমসি কলেজে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্যবস্থা চেয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন।

অবাধে বালু উত্তোলন বাঁধ-সেতু হুমকিতে

শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষার আবেদনের সময় বেড়েছে

পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরা হলো না কলেজছাত্র রিফাতের

সিলেট বার নির্বাচনে ভরাডুবি: জেলা ও মহানগর বিএনপিকে শোকজ

আগামীর বাংলাদেশ হবে খেলাফতের: মামুনুল হক

জগন্নাথপুরে বিএনপি কার্যালয়ে আগুন-ভাঙচুরের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

সুনামগঞ্জে তিন গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ১০

সিলেটে রিসোর্টে ৮ তরুণ-তরুণীকে জোর করে বিয়ে, কিছু না করেই ফিরে এল পুলিশ

জগন্নাথপুরে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা

বড়লেখায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে যুবদল নেতা নিহত

সেকশন