মাহাদী হাসান পান্থ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৯ জুলাই যাত্রাবাড়ী এলাকা তখন রণক্ষেত্র। কাজলায় ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে সেদিন সন্ধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন সরকারি তোলারাম কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার পরীক্ষার্থী মাহাদী হাসান পান্থ। সম্প্রতি প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন জিপিএ-৩.১৭।
৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন শিহাব আহমেদ। তিনি ছিলেন সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষার্থী। এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি পান জিপিএ- ৪.০৮। জেলার এনায়েতপুরের আজুগড়া গ্রামের বাসিন্দা মালয়েশিয়াপ্রবাসী শফি উদ্দিনের ৩ ছেলের মধ্যে শিহাব সবার বড়।
৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাগর গাজী। পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার উলানিয়া হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষায় তিনি পান জিপিএ-৩.৯২।
লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হয়েছিলেন সাদ আল আফনান পাটওয়ারী। তিনি পেয়েছেন জিপিএ-৪.১৭। তিনি লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের মাদাম ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন তিনি।
৫ আগস্ট ঠাকুরগাঁওয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হন আবু রায়হান। আলিম পরীক্ষায় তিনি পেয়েছেন জিপিএ-৫। ৪ আগস্ট আন্দোলনে যোগ দিয়ে পুলিশের ছড়রা গুলিতে আহত হন তিনি। ৫ আগস্ট বিকেলে পৌর শহরের ছিট চিলারং এলাকায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে চিকিৎসার জন্য রংপুর থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান রায়হান।
ময়মনসিংহের শ্রীবরদী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সবুজ মিয়া। তিনি পেয়েছেন জিপিএ-৪.৩৩। ৪ আগস্ট শেরপুর জেলা শহরের খরমপুর এলাকায় আন্দোলনে গিয়ে গুলিতে নিহত হন তিনি। পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন সবুজ।
সাভারে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়ে শহীদ হন নাফিসা হোসেন মারওয়া। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৪.২৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৭ বছর বয়সী এই কিশোরী ৫ আগস্ট দুপুরে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন থানা রোডে পুলিশের গুলিতে মারা যান।
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ আইডিয়াল কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শেখ শাহরিয়ার বিন মতিন। পরীক্ষায় তিনি জিপিএ-৪.৮৩ নিয়ে পাস করেছেন। আন্দোলনের কারণে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় তিনি ঢাকায় এসেছিলেন মায়ের কাছে। ১৮ জুলাই বিকেলে রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরের কাছে গুলিবিদ্ধ হন শাহরিয়ার। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জুলাই তিনি মারা যান।