হোম > পরিবেশ

কপ২৮ চুক্তি: জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি নেই

অনলাইন ডেস্ক

জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ২৮-এ জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রায় ২০০টি দেশ। জলবায়ুর ওপর জীবাশ্ম জ্বালানির বিরূপ প্রভাব এড়ানোর জন্য প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ক্রমে সরে আসার চুক্তিতে সম্মত হয়েছে দেশগুলো। 

এ চুক্তি নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনা চলার পর আজ বুধবার সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট সুলতান আল জাবের চুক্তিটি ঘোষণা করেন। জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্রধান সাইমন স্টিয়েল ও অন্য প্রতিনিধিরা তাঁকে এ সিদ্ধান্তের জন্য অভিনন্দন জানান।

তবে জীবাশ্ম জ্বালানি পর্যায়ক্রমে নির্মূল বা ব্যবহার হ্রাস করার জন্য অনেক দেশ, নাগরিক সমাজ ও বিজ্ঞানীরা অব্যাহত আহ্বানের পরও এ চুক্তিতে এ বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি অন্তর্ভুক্ত নেই।

এর পরিবর্তে চুক্তিটি মূলত একটি সমঝোতা। এতে দেশগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার থেকে সরে আসার জন্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় অবদান রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজ্ঞানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সুশৃঙ্খল এবং ন্যায়সংগত উপায়ে সব কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার কথা চুক্তিতে বলা হয়েছে, যেন ২০৫০ সাল নাগাদ নেট জিরো কার্বন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়।  

সম্মেলনে সভাপতি আল জাবের বলেন, দেশগুলো ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছে কি না, তা নিয়ে বৈশ্বিক মূল্যায়নের একটি বিস্তৃত প্রতিক্রিয়া এ চুক্তি।

তবে পাস হওয়ার আগে এ চুক্তি নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য দেশগুলোকে মাত্র চার ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। এ চুক্তি পাস হওয়ার পর প্ল্যানারি হলে বিভ্রান্তি দেখা দেয়। অনেকে মনে করেছিলেন, এ চুক্তি নিয়ে বিতর্ক হবে।

৩৯টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যালায়েন্স অব স্মল আইল্যান্ড স্টেটসের প্রতিনিধিরা বলছেন, চুক্তিটি গৃহীত হওয়ার সময় তাঁরা কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। তাঁরা তখনো চুক্তিটি পর্যালোচনা করছিলেন। 

সামোয়া থেকে স্মল আইল্যান্ড স্টেটসের প্রধান আলোচক অ্যান রাসমুসেন সরাসরি এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেননি। এ চুক্তির বেশ কয়েকটি ভালো দিক আছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়াটি তাঁদের হতাশ করেছে এবং এতে তেমন দূরদর্শী দিক নেই বলে মনে করেন তিনি। অ্যান বলেন, ‘এ চুক্তিতে বেশ ফাঁকফোকর রয়েছে।’

চুক্তি পাস হওয়ার পর জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস টুইট করে বলেন, ‘আপনি এটি পছন্দ করুন বা না করুন, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার নির্মূল হওয়া জরুরি। আশা করি, খুব বেশি দেরি হবে না।’

মার্কিন জলবায়ুদূত জন কেরি বলেন, ‘যদিও এখানে অনেকে তাঁদের মতামত পুরোপুরি প্রতিফলিত হতে দেখবেন না, তবে বাস্তবতা হলো, এ নথি বিশ্বকে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী বার্তা দেবে। আমাদের বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক্‌শিল্প স্তরের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি পর্যন্ত সীমা ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে।’

কেরি বলেন, ‘বিশ্বের সর্বোচ্চ কার্বন নিঃসরণকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন তাদের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হালনাগাদ করতে সম্মত হয়েছে। এমনকি তারা অন্যদেরও তাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ’

চুক্তি অনুসারে, দেশগুলো ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সীমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাসের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক নবায়নযোগ্য জ্বালানির সক্ষমতা তিন গুণ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে। এ চুক্তিতেও পূর্ববর্তী শীর্ষ সম্মেলনে ‘নিরবচ্ছিন্ন কয়লা বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস’ প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার আহ্বানের কথাই বলা হয়েছে।  

এ চুক্তিতে শূন্য ও নিম্ন কার্বন নিঃসরণ প্রযুক্তি তৈরির একটি তালিকা প্রস্তুত করতে বলা হয়। 

তবে জলবায়ুকর্মীরা বলছেন, ন্যায্য রূপান্তরের জন্য যা প্রয়োজন, তার কোনো উল্লেখ এ চুক্তিতে নেই। জ্বালানি হিসেবে কয়লা, তেল ও গ্যাস ব্যবহার থেকে সরে আসতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর কয়েক লাখ কোটি অর্থ প্রয়োজন। উন্নয়নশীল দেশের জন্য সে অর্থের জোগান কীভাবে হবে, তার উল্লেখ করা হয়নি।

খসড়াটিতে দুবাইয়ের সম্মেলনে উপস্থিত ২০০ দেশেরই দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন থাকার কথা। কিন্তু বেশ কয়েকটি দেশের সরকার সৌদি আরবসহ জ্বালানি তেল রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের সদস্যদের প্রতিবাদের বিরুদ্ধে গিয়ে কঠোরভাবে জীবাশ্ম জ্বালানি যুগের সমাপ্তির প্রতি জোর দিয়েছে। 

এ চুক্তি প্রসঙ্গে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পাওয়ার শিফট আফ্রিকার মোহাম্মদ আদো বলেন, ‘জলবায়ু আলোচনায় গত তিন দশকে প্রথমবারের মতো জীবাশ্ম জ্বালানি নিয়ে কপে আলোচনা উঠেছে। এটি একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠালেও এ চুক্তিতে অনেক বেশি ফাঁকফোকর রয়েছে। এতে কার্বন ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ নামের ব্যয়বহুল প্রযুক্তির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা জীবাশ্ম জ্বালানির প্রতি আগ্রহীরা নিজেদের সুবিধা তৈরির জন্য ব্যবহার করবে।’

এ চুক্তি ঘিরে অনেকে উচ্চ প্রত্যাশা পোষণ করলেও উন্নয়নশীল ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য এটি অসংগতিপূর্ণ এবং একেবারেই অপর্যাপ্ত বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকার বাতাসে খানিকটা উন্নতি, দূষণের শীর্ষে করাচি

পরিবেশ ধ্বংসের মূলেবাজার অর্থনীতি

ঢাকার বাতাস আজ ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, ভয়াবহ দূষণ করাচিতে

কুতুবদিয়া দ্বীপে নতুনভাবে বনায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে: পরিবেশ উপদেষ্টা

জলবায়ু পরিবর্তন: ২০৭০-৯০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক জিডিপি কমবে ৫০ শতাংশ

ঢাকার বাতাস আজ ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, শীর্ষে তাসখন্দ

কামরাঙ্গীরচরে তিন পলিথিন কারখানা সিলগালা, জব্দ ১০০ টন

হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষায় নাগরিক সংলাপ

বায়ুদূষণ রোধে অভিযান: ২৪ লাখ টাকা জরিমানা

ঢাকার বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর, মাস্ক পরার পরামর্শ আবহাওয়া অধিদপ্তরের

সেকশন