অ্যালার্জির সমস্যা অনেক মানুষের নিত্যদিনের ভোগান্তির অন্যতম কারণ। ধুলাবালু, খাবার, প্রসাধনী, পাউডার, বিছানার ধুলা এমনকি ওষুধেও অ্যালার্জি হয়। অনেক সময় এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি করে।
বর্তমানে ঘর থেকে বের হলেই ধুলাবালির মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে অনবরত নির্মাণকাজ চলার কারণে বাতাসে প্রচুর ধূলিকণা ছড়িয়ে পড়ে, যা অতিমাত্রায় অ্যালার্জির কারণ।
- অনবরত হাঁচি-কাশি
- নাক থেকে পানি পড়া
- চোখে চুলকানি ও লাল হওয়া
- চোখ থেকে ক্রমাগত পানি ঝরতে থাকা
- নাক বন্ধ হয়ে থাকা
- নাক, মুখ, গলা চুলকানি
- মুখের ভেতর তালু ও গলার ভেতরেও চুলকানি
- চোখের নিচ ও মুখ ফুলে যাওয়া
- নাকের পলিপ এবং মাথাব্যথা
- শ্বাসকষ্ট হওয়া
- কান ভারী লাগা
- কান চুলকানি
- ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া
- কাশি থাকলে রাতে ঘুমাতে কষ্ট হওয়া।
ডাস্ট অ্যালার্জির কারণ
- পরিবারের সবার থাকলে এটি হতে পারে। জন্মগতভাবে আইজিইর মাত্রা রক্তে বেশি থাকার কারণে এটি হয়। তবে মনে রাখতে হবে, এটি ছোঁয়াচে নয়।
- শিশু, হাঁপানি রোগী এবং গর্ভবতীদের এ ধরনের অ্যালার্জি হতে পারে।
- ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ধূলিকণা বা পোকা বাতাসে ভেসে চলাচলের সময় নাকে ঢুকে জ্বালা সৃষ্টি করে, যা নাক ও গলার জন্য চুলকানি বা অস্বস্তির কারণ।
- কয়েল বা বডি স্প্রের কণা নাকে প্রবেশ করলে তা থেকেও অ্যালার্জি হতে পারে।
- আর্দ্র পরিবেশের জন্য অ্যালার্জি হয়। ছত্রাকের জন্য হয়।
- বিছানার চাদর ঠিকমতো পরিষ্কার না করলেও অ্যালার্জি হতে পারে।
- তোয়ালে, উল ও লোমজাতীয় কাপড় থেকে ডাস্ট অ্যালার্জি বেড়ে যেতে পারে।
প্রতিকারের উপায়
- ঘর থেকে বের হলে আরামদায়ক এবং স্বাস্থ্যকর মাস্ক ব্যবহার করুন।
- বাসাবাড়ির আসবাবের ধুলা নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
- ঘুমানোর আগে বিছানা ভালোভাবে ঝেড়ে নিন।
- ঘর ঝাড় দেওয়ার সময় নাক ও মুখ যতটা সম্ভব ভালোভাবে ঢেকে নিন।
- দৈনন্দিন ব্যবহার্য কাপড়চোপড়, চাদর, বালিশ ইত্যাদি মাঝেমধ্যে কড়া রোদে শুকিয়ে নিন।
- সপ্তাহে অন্তত একবার হলেও বিছানার চাদর, বালিশের কভার পরিবর্তন করুন।
- বাসায় কার্পেট থাকলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
- শিশুদের জন্য কার্পেটের ওপর কাপড় বিছিয়ে দিন।
- বাসায় লোমশ বা পালকযুক্ত প্রাণী না পোষা ভালো। তবে থাকলে নিয়মিত তাদের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে।
- বাইরে থেকে এসে হাত-মুখ দ্রুত ধুয়ে ফেলুন।
চিকিৎসা
- চোখ-নাকে চুলকানি বা হাঁচি শুরু হলে কুসুম গরম পানিতে লবণ দিয়ে হাত-মুখ-নাক দ্রুত ধুয়ে নিন।
- অতিরিক্ত হাঁচি হলে গরম পানির বাষ্প নিন।
- বাসায় অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ রাখুন। বেশি সমস্যা হলে একটি ট্যাবলেট খেয়ে নিন।
ডা. মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ পাভেল, নাক, কান, গলারোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জন, ডিএলও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়