হোম > স্বাস্থ্য

অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর করতে রাইবোজোমে পরিবর্তন আনে ব্যাকটেরিয়া: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক

অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ই–কোলাই ব্যাকটেরিয়া নতুন রাইবোজোম তৈরি করতে শুরু করেছবি: আজকের পত্রিকা

অ্যান্টিবায়োটিক সম্পর্কিত নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় জানা গেছে, যখন ব্যাকটেরিয়া দীর্ঘ সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিকের সংস্পর্শে আসে, তখন তারা তাদের রাইবোজোমে কিছু সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটায়। অ্যান্টিবায়োটিকের লক্ষ্যস্থানে (যেখানে ঔষধটি কাজ করতে থাকে) পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে এই পরিবর্তনগুলো। এর ফলে অ্যান্টিবায়োটিকটি আর সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না এবং ব্যাকটেরিয়াটি অ্যান্টিবায়োটিকটি অকার্যকর করতে সক্ষম হয়। এই তথ্য ব্যাকটেরিয়ার অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় গবেষকদের নতুন কৌশল তৈরিতে সাহায্য করবে।

গবেষণাটি নেচার কমিউনিকেশনস জার্নালে প্রকাশিত হয়।

এশেরিখিয়া কোলাই বা ই কোলাই একটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়া। এটি মূলত কোনো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নয়। তবে এটি গুরুতর সংক্রমণ সৃষ্টি করতে পারে। গবেষণার জন্য ই কোলাই-কে স্ট্রেপ্টোমাইসিন এবং কাসুগামাইসিন নামের দুটি সংক্রমণ প্রতিরোধকারী ওষুধের সংস্পর্শে নিয়ে এসেছিলেন গবেষকেরা। ১৯৪০ এর দশক থেকে টিবি এবং অন্যান্য সংক্রমণ চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে স্ট্রেপ্টোমাইসিন। কাসুগামাইসিন তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত হলেও কৃষিতে ফসলের ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ প্রতিরোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখিত দুটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার নতুন প্রোটিন তৈরি করার ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করে। বিশেষ করে তাদের রাইবোজোমকে লক্ষ্য করে। রাইবোজোম একটি অণু কাঠামো, যা প্রোটিন তৈরি করে এবং নিজেই প্রোটিন এবং রাইবোজোমাল আরএনএ দিয়ে তৈরি। রাইবোজোমাল আরএনএ প্রায়ই রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে সংশোধিত হয়। এই প্রক্রিয়অ রাইবোজোমের আকার এবং কার্যকারিতা পরিবর্তন করতে পারে। কোষগুলো এই উপাদানগুলো ব্যবহার করে প্রোটিন উৎপাদনকে সূক্ষ্মভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ই–কোলাই ব্যাকটেরিয়া নতুন রাইবোজোম তৈরি করতে শুরু করে, যা সাধারণ পরিস্থিতিতে তৈরি হওয়া রাইবোজোম থেকে কিছুটা আলাদা। গবেষণায় দেখা গেছে যে, ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের ওপর ভিত্তি করে নতুন রাইবোজোমে কিছু রাসায়নিক উপাদান অনুপস্থিত থাকে। এই উপাদানগুলো বিশেষভাবে সেই অঞ্চল থেকে হারিয়ে যায় যেই স্থানে অ্যান্টিবায়োটিকগুলো রাইবোজোমের সঙ্গে আটকায় এবং প্রোটিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর বিরুদ্ধে আরও প্রতিরোধী হয়ে ওঠে।

গবেষণার প্রথম লেখক আন্না ডেলগাডো-টেজেডর বলেন, ‘ব্যাকটেরিয়ার রাইবোজোম তার গঠন এতটা পরিবর্তন করছে যাতে অ্যান্টিবায়োটিকটি কার্যকরভাবে আটকে না যেতে পারে।’

ব্যাকটেরিয়া অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন উপায়ে বিকশিত হয়। এর মধ্যে ডিএনএ-এর মিউটেশনও অন্তর্ভুক্ত। আরেকটি সাধারণ পদ্ধতি হলো—অ্যান্টিবায়োটিকগুলো সক্রিয়ভাবে কোষ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া। ফলে কোষের ভিতরে ওষুধ ঘনত্ব এমন পর্যায়ে থাকে যা আর ব্যকটেরিয়ার জন্য ক্ষতিকর নয়।

এই গবেষণার আরেক লেখক এবং সেন্টার ফর জিনোমিক রেগুলেশন (সিআরজি)-এর গবেষক ড. এভা নোভোয়া বলেন, কোলি তার আণবিক গঠনকে চমৎকারভাবে এবং বাস্তব সময়ে পরিবর্তন করছে। এটি অ্যান্টিবায়োটিক থেকে বাঁচার একটি সূক্ষ্ম পদ্ধতি।’

গবেষকরা এই আবিষ্কারগুলো উন্নত ন্যানোপোর সিকোয়েন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে করেছেন, যা সরাসরি আরএনএ অণুর ক্রম পড়তে পারে। পূর্বের প্রযুক্তিগুলো আরএনএ অণুগুলোকে এমনভাবে প্রক্রিয়াকরণ করত যে, রাসায়নিক পরিবর্তনগুলো মুছে ফেলা হত। ড. নোভোয়া আরও বলেন, ‘নতুন পদ্ধতিটি স্বাভাবিক অবস্থায় পরিবর্তনগুলো দেখতে সাহায্য করেছে।’

তবে কেন বা কীভাবে রাসায়নিক পরিবর্তনগুলো হারিয়ে যায় তা গবেষণায় পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। গবেষণাটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকটে অন্যতম সবচেয়ে বড় হুমকি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রতিরোধের বিরুদ্ধে নতুন কৌশল আবিষ্কার করতে সহায়ক হতে পারে। ১৯৯০ সাল থেকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারলে ফলে প্রতি বছর অন্তত দশ লাখ মানুষ মারা গেছে। ২০৫০ সালের মধ্যে আরও ৩৯ মিলিয়ন মানুষ এজন্য মারা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: নিউজ মেডিক্যাল লাইফ সায়েন্স

ব্যথার ওষুধের বিকল্প ভাবা হয় লবঙ্গকে

গর্ভাবস্থায় মেথি খাওয়া যায়

কাঁধ নাড়াচাড়া করতে না পারলে

শীতকালে পানিশূন্যতায় স্বাস্থ্যঝুঁকি এবং প্রতিকার

চোখের সমস্যা থেকে মাথাব্যথা হতে পারে

নিয়মিত চা পানকারীরা কেন দীর্ঘায়ু হন, জানালেন বিজ্ঞানীরা

এইচএমপিভিতে মহামারির আশঙ্কা কম, অভিমত বিএসএমএমইউর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের

দেশে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত একমাত্র রোগীর মৃত্যু

এইচএমপিভি ভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা

দেশে এইচএমপিভি ভাইরাস শনাক্ত, আক্রান্ত একজন নারী

সেকশন