হোম > বিশ্ব > এশিয়া

দাবি নিয়ে রাস্তার পাশে গাছতলায় এক আফগান নারী

অনলাইন ডেস্ক

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের অধীনে নারীদের দুর্দশার একটি হৃদয়বিদারক গল্পে বিবি নাজদানা হলেন এমন একজন, ছোটবেলায় নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাঁকে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই বিবাহ থেকে বিচ্ছেদের জন্য এখন তিনি লড়াই করছেন। কয়েক বছর আগে আদালত থেকে এই অধিকার আদায় করে নিতে সক্ষম হলেও বর্তমানে তালেবানের শরিয়া আইনের কঠোর ব্যাখ্যায় তাঁর সেই আইনি বিজয় অর্থহীন হয়ে পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, গত বছরের পুরোটাই পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে ২০ বছর বয়সী এই নারীকে। বর্তমানে কিছু নথিপত্র আঁকড়ে ধরে রাজধানী কাবুলে দুটি ব্যস্ত রাস্তার মাঝখানে একটি গাছের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। 

রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, আফগানিস্তানের উরুজগান প্রদেশের নারী নাজদানার কাছে থাকা নথিগুলো তাঁর কঠোর সংগ্রামের প্রতীক। মাত্র সাত বছর বয়সে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সেই সংসার থেকে মুক্তি পেতে দুই বছরের আইনি লড়াইয়ের পর তিনি যে অধিকার পেয়েছিলেন, সেসবেরই প্রমাণ এসব কাগজ। 

সাত বছর বয়সে নাজদানাকে যখন হেকমতুল্লাহ নামের এক ব্যক্তির কাছে বিয়ের জন্য প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, তখন থেকেই তাঁর সংগ্রামের জীবন শুরু হয়। ১৫ বছর বয়সে হেকমতউল্লাহর সঙ্গে সংসার করতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। দেশে তখন মার্কিনসমর্থিত পূর্ববর্তী আফগান সরকার। ওই বিয়ের বিরুদ্ধে সেই সরকারের আদালতে আপিল করেছিলেন নাজদানা। আইনি লড়াই শেষে বিচ্ছেদের অধিকারও পেয়েছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালে তালেবান বাহিনী আফগানিস্তান দখল করে নেয়। তালেবানরা ক্ষমতায় আসার ১০ দিনের মধ্যেই নাজদানার আদায় করে নেওয়া বিবাহবিচ্ছেদ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করেন হেকমতুল্লাহ। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তালেবান আদালত নাজদানার বিবাহবিচ্ছেদ বাতিল করে দেয়। যুক্তি দেখানো হয়, সেই বিচ্ছেদ অবৈধ ছিল; কারণ, বিচারের সময় হেকমতউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন না। 

এ অবস্থায় নাজদানা যখন তাঁর মামলা রক্ষার চেষ্টা করেছিলেন, তখন তাঁকে এটাও বলা হয়, আদালতে একজন পুরুষ অভিভাবককে তাঁর হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে হবে। কারণ, সেই আদালত বিচারব্যবস্থায় অংশগ্রহণের জন্য নারীকে অযোগ্য বলে মনে করে। বাধ্য হয়ে তাই পুরুষ অভিভাবক হিসেবে আদালতে নিজের ভাই শামসকে নিয়ে গিয়েছিলেন নাজদানা। শামস বোনের পক্ষে যথাসম্ভব যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু তাঁর কোনো কথাই শোনেননি সেই আদালত। ফলে নিজেদের প্রদেশ উরুজগান থেকে দুই ভাই-বোনের পালানো ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষমতায় ফিরে আসার পর তালেবান সরকার শরিয়ার কঠোর ব্যাখ্যার মাধ্যমে আগের সরকারের হাজার হাজার আদালতের রায়কে বাতিল করে দিয়েছে। নাজদানার বিবাহবিচ্ছেদের মতো পূর্ববর্তী এসব রায় প্রকৃত ইসলামিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না বলে দাবি করেছে তারা। তবে তালেবান সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আফগান সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক ফওজিয়া আমিনিসহ সমালোচকেরা বলছেন, আফগানিস্তানের দেওয়ানি বিধির মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদ আইন রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এই আইনের শিকড় কোরআনের মধ্যেই রয়েছে। 

পালিয়ে থাকা অবস্থায় প্রতিবেশী একটি দেশে চলে যেতে চেয়েও ব্যর্থ হয়েছিলেন নাজদানা। এ বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘সাহায্য চেয়ে আমি অনেক দরজায় গেছি। কিন্তু কেউ তা করেনি। একজন নারী হিসেবে আমি কি স্বাধীনতার যোগ্য নই?’

দীর্ঘজীবনের গোপন রহস্য জানালেন ১২৪ বছর বয়সী চীনা নারী

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অস্ত্র পাচারের চেষ্টা, মিজোরামে আটক ৫

২০২৪ সালে জাপান ভ্রমণ করেছে রেকর্ড ৩ কোটি ৭০ লাখ পর্যটক

অবশেষে গ্রেপ্তার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট

রাশিয়ায় উ. কোরীয় সেনাদের ‘অবমূল্যায়নের সুযোগ নেই’

ভেসে আসছে রহস্যময় বল, সিডনির ৯ সৈকত বন্ধ

‘মৃত্যুর পর কী হয়’, আত্মহত্যার আগে গুগলে সার্চ করেছিল কিশোর

ইসলাম অবমাননার অভিযোগে শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ভিক্ষুর ৯ মাসের কারাদণ্ড

তালেবানকে বৈধতা না দিতে মুসলিম নেতাদের প্রতি মালালার আহ্বান

১০০ বছর আগে নারীঘটিত যে খুন কাঁপিয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজনীতি

সেকশন