অনলাইন ডেস্ক
উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে যেকোনো হস্তক্ষেপকে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে হুমকি দিয়েছে কিম জং উন সরকার। আজ শনিবার এক বিবৃতিতে উত্তর কোরিয়া বলেছে, কৌশলগত সম্পদের ওপর কোনো ধরনের আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিলে তারা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করবে।
উত্তর কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের এক বিবৃতিকে উদ্ধৃত করে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ বলেছে, মার্কিন হস্তক্ষেপের জবাবে পিয়ংইয়ং মহাকাশে মার্কিন গোয়েন্দা স্যাটেলাইটের কার্যকারিতা নষ্ট করে দেবে।
বিবৃততে বলা হয়, ‘যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবৈধ ও অন্যায়ভাবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের বৈধ সীমানা লঙ্ঘন করার চেষ্টা করে, তবে উত্তর কোরিয়া আত্মরক্ষার জন্য মার্কিন গোয়েন্দা স্যাটেলাইটের কার্যকারিতা হ্রাস বা ধ্বংস করার মতো পাল্টা পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করবে।’
গত ২১ নভেম্বর উত্তর কোরিয়া সফলভাবে এর প্রথম গোয়েন্দা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করার দাবি করে। স্যাটেলাইট ব্যবহার করে উত্তর কোরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ড, জাপান এবং গুয়ামে মার্কিন সামরিক ঘাঁটির ছবি তোলে।
মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম আরএফএ—এর প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে হস্তক্ষেপ করার মতো ক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ কমান্ড মুখপাত্র বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের মহাকাশ সক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে।
আজ উত্তর কোরিয়ার আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এক বিশ্লেষকের মন্তব্য প্রকাশ করে কেসিএনএ। তিনি বলেন, ‘স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ যদি অপরাধ হয় তবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মুখোমুখি হওয়া।’
বিবৃতিতে বিশ্লেষক বলেন, কোরীয় উপদ্বীপের আশপাশে এশিয়ার উত্তর–পূর্বাঞ্চলে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘাত হলে এর জন্য সম্পূর্ণ দায়ী হবে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র নানাভাবে উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সম্মিলিত সামরিক মহড়া করে পারমাণবিক ক্ষমতা প্রদর্শন করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি।
স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র উত্তর কোরিয়ার ওপর আরও কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। উত্তর কোরিয়ার স্যাটেলাইট ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কর্মসূচি অব্যাহত রাখায় গতকাল শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর কোরীয়কে কালো তালিকাভুক্ত করে।