অনলাইন ডেস্ক
অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে সঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
ধর্ষণের অভিযোগে স্ত্রীর করা মামলায় নিম্ন আদালতের ১০ বছরের কারাদণ্ড বাতিল চেয়ে আপিল করেন এক ব্যক্তি। শুনানি শেষে নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি জি. এ. স্যানাপ গত মঙ্গলবার আপিল খারিজ করে নিম্ন আদালতের দণ্ড বহাল রাখার রায় দেন।
বিচারপতি স্যানাপ বলেন, বিবাহিত হোক বা না হোক— ১৮ বছরের নিচে যে কোনো মেয়ের সঙ্গে যৌনসঙ্গম আইনে ধর্ষণ হিসেবে গণ্য।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি মহারাষ্ট্রের ওয়ার্দায় বাদীর প্রতিবেশী ছিলেন। তিনি বিয়ের আগে মেয়েটির সঙ্গে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গম করায় গর্ভধারণ করেন তিনি। পরে তাঁদের মধ্যে বিয়ে হয়। কিন্তু সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করায় ২০১৯ সালের মে মাসে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন মেয়েটি।
ওই মামলার বিচার শেষে ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ওয়ার্দা জেলার বিচারিক আদালত তাঁকে ধর্ষণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। ওই রায় বাতিল চেয়ে দণ্ডিত ব্যক্তি হাই কোর্টে আপিল করেন।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, অভিযোগের আগে ওই ব্যক্তির সঙ্গে ৩-৪ বছর ধরে মেয়েটির ‘প্রেমের সম্পর্ক’ ছিল। তবে যৌন সম্পর্কের প্রস্তাব বরাবরই প্রত্যাখ্যান করেছে মেয়েটি। কিন্তু এক পর্যায়ে তাকে যৌন সম্পর্কে বাধ্য করেন তিনি। এর ফলে সন্তানসম্ভবা হয়ে পড়েন মেয়েটি।
ওই মেয়ের অভিযোগ, দণ্ডিত ব্যক্তি প্রথমে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। পরে কয়েকজন প্রতিবেশীর উপস্থিতিতে একটি ভাড়া ঘরে ‘বিয়ের নাটক’ সাজানো হয়। কিন্তু এরপর দণ্ডিত ব্যক্তি তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করেন। তিনি গর্ভপাতের জন্যও চাপ দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে পিতৃত্ব অস্বীকার করেন এবং অভিযোগ করেন, গর্ভের সন্তানটির বাবা তিনি নন, অন্য কেউ।
দণ্ডিত ব্যক্তি হাইকোর্টে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ওই নারী তাঁর স্ত্রী এবং তাঁর সম্মতিক্রমে যৌনসঙ্গম হয়েছিল।
বিচারপতি স্যানাপ বলেন, ‘আমার মতে, একাধিক কারণে এই বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। অপরাধ সংঘটনের তারিখে ভিকটিমের বয়স ১৮ বছরের কম ছিল বলে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া ডিএনএ পরীক্ষায় দেখা গেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি ও ভুক্তভোগী নারী জন্ম নেওয়া শিশুটির জৈবিক বাবা-মা।’