আজকের পত্রিকা ডেস্ক
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদনের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ঘটনায় উল্টো আইসিসির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের এক শুনানিতে এমন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ইসরায়েলের নেতাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া আইসিসির প্রসিকিউটরদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়ে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, সে বিষয়ে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে একত্রে কাজ করব। ‘সম্পূর্ণ ভুল’ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমি ‘প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
আইসিসির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগটি মূলত নিয়েছেন দেশটির রিপাবলিকান দলীয় আইনপ্রণেতারা। বিষয়টি নিয়ে এ সপ্তাহেই প্রতিনিধি পরিষদে ভোটাভুটি হতে পারে। এ নিয়ে রিপাবলিকানদের তৎপরতার মধ্যেই কংগ্রেসের শুনানিতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
শুনানিতে সিনেটে বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির রিপাবলিকানদলীয় সদস্য জেমস রিসচ বলেন, ভিন্ন দেশে, বিশেষ করে যেসব দেশের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বিচারব্যবস্থা রয়েছে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া উচিত।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন, একটি দেশের (ইসরায়েল) স্বাধীন, বৈধ ও গণতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়া থাকা সত্ত্বেও তাদের বিষয়ে আইসিসির নাক গলানোকে তিনি সমর্থন করবেন কি না। জবাবে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘একটি উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য আমাদের উভয় দলকে মিলেমিশে কাজ করা উচিত এবং এর জন্য আমি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা দলমত-নির্বিশেষে আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই। একটা সম্পূর্ণ ভুল সিদ্ধান্তের বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে কোনো প্রশ্নের অবকাশ নেই।’
আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি করিম খান গত সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ইসরায়েল ও হামাসের পাঁচজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানান। তাঁরা হলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত, গাজা উপত্যকার হামাস প্রধান ইয়াহিয়া সিনাওয়ার, আল ক্বাসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দাইফ এবং হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র নিজে আইসিসির সদস্য রাষ্ট্র না হলেও ইতিপূর্বে ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জারির বিষয়ে সংস্থাটির উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল ওয়াশিংটন। কিন্তু এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ওপর পরোয়ানা জারির আবেদন করায় ক্ষুব্ধ হয় যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘মনে রাখা উচিত যে হামাস ও ইসরায়েলকে কখনো এক পাল্লায় বিবেচনা করা যায় না।’