অনলাইন ডেস্ক
ঢাকা: নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বার্ষিক বাজেট প্রস্তাব করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ২০২২ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত ওই বাজেটে পাকিস্তানকে আর্থিক ও সামাজিক সহায়তা দিতে ও সেনাসদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতে অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এমনটি জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২০২২ সালের জন্য ৬ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেট প্রস্তাব করেছেন; যা মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট। ওই বাজেটে অপ্রতিরক্ষা খাতে ১৬ শতাংশ ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এর বেশির ভাগই যাবে বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচি ও অবকাঠামো খাতে।
এ ছাড়া প্রতিরক্ষা খাতে ৭১৫ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব করেছেন বাইডেন। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ৩ শতাংশের মতো কম হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিলে যুক্তরাষ্ট্রের এই খাতে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার খরচ কমে যাবে। তবে আফগানিস্তান নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে সহায়তা করা জন্য ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে; যা ২০২১ অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানের জন্য যে অর্থ চেয়েছে তার মধ্যে পাকিস্তানের নামও রয়েছে।
গত শুক্রবার কংগ্রেসে এ সংক্রান্ত যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে অর্থায়ন সেখানে গণতান্ত্রিক সরকারের বিকাশে সহায়তা করবে, বিশেষ করে খায়বার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে এর সুফল পাওয়া যাবে। যেটি আফগান সীমান্তের কাছে অবস্থিতি। এ ছাড়া পাকিস্তানে অর্থায়ন আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতার জন্য ও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও কাজে দেবে।
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার জন্য মার্কিন বাজেটে যে ৩২৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার রাখা হয়েছে, এই তহবিল আসবে সেখান থেকে। এই তহবিলের উদ্দেশ্য হলো-দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখা, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা, কোভিড–১৯ থেকে আর্থিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সম্পর্ক আরও দৃঢ় করা।
দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেইনিংয়ের জন্য (আইএমইটি) ১৩ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলারও চেয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ। আইএমইটি যুক্তরাষ্ট্রের ছোট একটি কর্মসূচি হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সমন্বয় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ওয়াশিংটন পাকিস্তানকে এ কর্মসূচি থেকে বাদ দিয়েছিল, কিন্তু ২০২০ সালে ট্রাম্প প্রশাসন পাকিস্তানকে আবার এ তালিকায় যুক্ত করে।
সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা ও আইনপ্রণেতারা পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে নতুন করে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। পাকিস্তানের ভূমি ও আকাশসীমা ব্যবহারে আগ্রহের কথাও বলছেন তারা।
জঙ্গি দমনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে ২০১৮ সালে পাকিস্তানে ৩০ কোটি ডলার সহায়তা বন্ধ করে দেয় তৎকালীন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ওই বছরই পাকিস্তানের জন্য প্রায় সব ধরনের নিরাপত্তা সহায়তা কাটছাঁট করা হবে বলে ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।