রোজা রেখে দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজ করতে ইসলামে কোনো বাধা নেই। তবে রোজার ক্ষতি হয় এমন কাজ থেকে সচেতনভাবে দূরে থাকতে হবে। এখানে রোজাদারের কিছু সাধারণ ভুলের কথা তুলে ধরা হলো—
- আগে আগে সাহরি খাওয়া: সাহরির সময় শেষ হওয়ার অনেক আগেই সাহরি খাওয়ার প্রবণতা অনেকের মধ্যেই লক্ষণীয়, এটি সুন্নতসম্মত নয়।
- রোজার নিয়ত করতে ভুলে যাওয়া: মুখে নিয়ত করা নিয়ে বিতর্ক থাকায় অনেকেই তা থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু সমস্যা হলো—উদাসীনতার কারণে অনেকে অন্তরে নিয়ত করতেও ভুলে যান। অবশ্য নিয়ত আরবিতে করা জরুরি নয়।
- অনিচ্ছাকৃত পানাহার: অনেকের ধারণা, ভুলে কোনো কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙে যায়। এটি প্রচলিত ভুল ধারণা।
- জোহর-আসর একসঙ্গে আদায়: রমজানে কেউ কেউ জোহর ও আসরের নামাজ একত্রে আদায় করে থাকেন, যা সর্বসম্মতিক্রমে বর্জনীয়।
- আজানের পর ইফতার: কেউ কেউ মনে করেন, মুয়াজ্জিন মাগরিবের আজান শেষ করা পর্যন্ত ইফতারের জন্য অপেক্ষা করা উচিত। এটি ভিত্তিহীন। বরং সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করা উত্তম।
- দোয়া করতে ভুলে যাওয়া: ইফতার তৈরির ব্যস্ততায় অনেকেই ইফতারের পূর্বমুহূর্তে দোয়া করতে ভুলে যান। অথচ, ইফতারের পূর্বমুহূর্ত দোয়া কবুলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলোর একটি।
- রমজানের শেষ দিকে: ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে রমজানের শেষ সময়টার প্রতি অবহেলা অধিক পরিমাণে লক্ষণীয়, যা রমজানের মূল উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে।
- সময়ের অপচয়: অনেকেই ঘুমিয়ে কিংবা অন্যান্য অপ্রয়োজনীয় কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখে রমজান পার করে দেয়। যদিও রমজান বছরের সবচেয়ে মূল্যবান সময়।
- লালা গিলে ফেলা: মুখের লালা গলার ভেতরে চলে গেলে রোজা নিয়ে অনেকে সংশয়ে পড়েন। এটি ঠিক নয়। এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
- সুগন্ধি ব্যবহার: অনেকের মতে, রোজা রেখে সুগন্ধি ব্যবহার করা যায় না। এটির কোনো দালিলিক ভিত্তি নেই।
- গুনাহের কাজ করলে: অনেকে মনে করেন, গুনাহের কাজ করলে রোজা ভেঙে যায়। যেমন গান শোনা, নাটক-মুভি দেখা বা ঘুষ খাওয়া ইত্যাদি কারণে রোজা নষ্ট হয়ে যায়, যা ঠিক নয়। এগুলো গুনাহের কাজ। রোজায় কঠিনভাবে এসব কাজ থেকে বিরত থাকা চাই। তবে এসবের কারণে রোজা ভাঙে না।
- পরিশ্রম করলে: অনেকে মনে করেন, পরিশ্রম করলে রোজা রাখা জরুরি নয়। এটি ভুল ধারণা। দিনমজুর, কুলি ও রিকশাচালকদের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এমনটি করা উচিত নয়। একান্ত অপারগ না হলে রোজা রাখতে হবে।