হোম > ইসলাম

বাবার খুশিতে আল্লাহ খুশি

রায়হান রাশেদ

সন্তানের জন্য বাবার হৃদয়ে আছে অফুরন্ত শুভকামনা। আছে সঞ্চিত দয়ার ভান্ডার। বাবা নির্ভয় ও নির্ভরতার আশ্রয়স্থল। বাবার ছায়ার মতো এত পবিত্র, বিশ্বাসী ছায়া পৃথিবীতে নেই। এ ছায়ায় কোনো কলুষতা নেই। স্বার্থ নেই। ভয় নেই। দ্বান্দ্বিকতা নেই। এ ছায়া ভালোবাসার। মায়ার। ভরসার। সৌভাগ্যের। কল্যাণ ও প্রার্থনার।

সন্তানের জীবনজুড়ে আছে মা-বাবার আত্মত্যাগ। মা-বাবার হাড়ভাঙা পরিশ্রমের বদৌলতে সন্তান বেড়ে ওঠে। তাঁদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করা ইমানি দায়িত্ব। মা-বাবার ত্যাগ ও কষ্টের মূল্যায়ন করে আল্লাহ বলেন, ‘তোমার প্রতিপালক আদেশ দিয়েছেন, তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কোরো না এবং মা-বাবার প্রতি সদ্ব্যবহার করো। তাঁদের একজন অথবা উভয়েই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাঁদের ‘উফ’ বোলো না এবং তাঁদের ধমক দিয়ো না। তাঁদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বলো। মমতাবশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত করো এবং বলো—হে আমার প্রতিপালক, তাদের প্রতি রহম করুন, যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।’ (সুরা বনি ইসরাইল: ২৩-২৪)

জান্নাতে প্রবেশ করতে হলে বাবার সন্তুষ্টির সবুজ কার্ড লাগবে। তাঁর সন্তুষ্টি ছাড়া জান্নাতে যাওয়া যাবে না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বাবা জান্নাতের মধ্যবর্তী দরজা। এখন তোমার ইচ্ছা, এর হেফাজত করো অথবা একে নষ্ট করে দাও।’ (মুসনাদে আহমদ: ২১৭৬৫)

মুসলমানের জীবনে সবচেয়ে বড় অর্জন হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি। আল্লাহর সন্তুষ্টি পেতে হলে বাবার সন্তুষ্টি লাগবে। বাবাকে কষ্ট দিয়ে আল্লাহকে খুশি করা যায় না। আল্লাহকে পাওয়া যায় না। রাসুল (সা.) বলেন, ‘বাবার সন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহ তাআলার সস্তুষ্টি এবং বাবার অসন্তুষ্টির মধ্যেই আল্লাহ তাআলার অসন্তুষ্টি রয়েছে।’ (তিরমিজি: ১৮৯৯)

আমাদের ভেবে দেখা উচিত, যে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়ে আছি, যে কাজ বা চাকরি করছি, এতে বাবা খুশি কি না। একবার নবী (সা.) ও সাহাবিরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এক সাহাবি যুদ্ধে যাওয়ার জন্য নবীজির কাছে ছুটে এলেন। অনুমতি প্রার্থনা করলেন। নবীজি তাকে অনুমিত দেননি। বরং মা-বাবার সেবায় আত্মনিয়োগের পরামর্শ দিলেন।

সন্তানের আয় থেকে বাবা চাইলে খরচ করতে পারেন। সামর্থ্যবান সন্তানের উচিত সাধ্যানুযায়ী বাবার জন্য খরচ করা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বলল, ‘আমার সম্পদ আছে, সন্তান আছে। আমার বাবাও আছেন। আমার বাবা আমার সম্পদের মুখাপেক্ষী। এখন আমার করণীয় কী?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি ও তোমার সম্পদ তোমার বাবার।’ আরও বললেন, ‘তোমাদের সন্তানাদি তোমাদের সর্বোত্তম উপার্জন। সুতরাং তোমরা সন্তানদের সম্পদ ভোগ করতে পারো।’ (ইবনে মাজাহ: ১৮৭০)

মা-বাবার প্রতি মায়া-মমতার সঙ্গে তাকানোও বড় সওয়াবের কাজ। রাসুল (স.) বলেন, ‘যে সন্তান তার মা-বাবার দিকে সশ্রদ্ধ ও ভালোবাসার নজরে তাকায়, সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহ তার আমলনামায় একটি কবুল হজের সওয়াব লিখে দেন।’ এ কথা শুনে উপস্থিত সাহাবিরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, সে যদি ওইভাবে দৈনিক ১০০ বার তাকায় তাহলে কি সে ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে?’ নবীজি বললেন, হ্যাঁ, যদি দৈনিক ১০০ বারও তাকায়, তাহলে সেই সন্তান ১০০ কবুল হজের সওয়াব পাবে।’ (শুআবুল ইমান: ৭৪৭২) 

লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক

ইমানি শক্তি বাড়ে যে ৩ আমলে

নামাজের ইমামতি করতে যে যোগ্যতা দরকার

কোরআনে ইসলাম প্রচারকের অপরিহার্য ৫ গুণ

জানাজা ও কাফনদাফনে অংশ নেওয়ার সওয়াব

হালাল-হারাম নিয়ে সংশয় থাকলে করণীয়

আসরের নামাজ যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

কোরআন জীবনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ

রমজানের প্রস্তুতি শুরু হোক এখনই

মুসলিম ঐতিহ্যে টুপির গুরুত্ব

ব্যবসা-বাণিজ্যে নিষিদ্ধ ৮ কাজ

সেকশন