শরিফ আহমাদ
ইসলামের পরিভাষায় নফস একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ। এটি মূলত প্রবৃত্তিকে বোঝায়। প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, এটি ভালো-মন্দ উভয় কাজের দিকে ধাবিত করে। তাই এর সঠিক পরিচর্যা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একে উন্নত করার বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘অবশ্যই সে সফলকাম হয়েছে, যে নফসকে পরিশুদ্ধ করেছে। আর সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা বিনষ্ট করেছে।’ (সুরা শামস: ৯-১০) প্রবৃত্তির তিনটি স্তর রয়েছে। যথা:
এক. নফসে আম্মারা (প্রতারক প্রবৃত্তি): প্রবৃত্তির এই স্তর মানুষকে খারাপ কাজের দিকে ধাবিত করে; পাপের প্রতি আকর্ষণ বাড়ায়। এ অবস্থায় প্রবৃত্তি মানুষকে বারবার ভুল পথে টানে। এরশাদ হয়েছে, ‘আমি নিজেকে নির্দোষ মনে করি না, মানুষের মন অবশ্যই মন্দ কর্মপ্রবণ। কিন্তু সে নয়, যার প্রতি আমার রব অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয়ই আমার রব অতি ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ (সুরা ইউসুফ: ৫৩)
দুই. নফসে লাওয়ামা (অনুশোচনাকারী প্রবৃত্তি): প্রবৃত্তির এ স্তরটি ভালো-মন্দের মধ্যে সংগ্রাম করে। নিজের ভুল কাজের জন্য অনুশোচনায় ভোগে। এটি একধরনের মধ্যবর্তী স্তর, যা তৎক্ষণাৎ নিজের ভুল বুঝে অনুশোচনা করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি শপথ করছি কিয়ামত দিবসের। আরও শপথ করছি তিরস্কারকারী আত্মার।’ (সুরা কিয়ামা: ১-২)
তিন. নফসে মুতমায়িন্না (প্রশান্ত প্রবৃত্তি): নফসের এই অবস্থা যাঁদের অর্জিত হয়, তাঁরা আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলেন এবং তাতে তৃপ্ত থাকেন। এটি হলো সবচেয়ে প্রশংসিত। এমন ব্যক্তিদের ঠিকানা জান্নাত। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘বলা হবে, হে প্রশান্ত চিত্ত, তুমি তোমার রবের নিকট ফিরে এসো সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। এরপর তুমি আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ করো।’ (সুরা ফাজর: ২৭-৩০)
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক