আবদুল আযীয কাসেমি
প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার জন্য রোদ-বৃষ্টির প্রয়োজন অনস্বীকার্য। তবে অতিবৃষ্টি যেমন মানববসতির জন্য বয়ে আনে নানা সংকট, তেমনি অনাবৃষ্টি ও প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে মানুষ, পশুপাখি, বৃক্ষ ও তরুলতা সবকিছুই হাঁপিয়ে ওঠে। একচিলতে বৃষ্টির জন্য সৃষ্টি হয় তীব্র হাহাকার।
এমন সংকটময় মুহূর্তে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করার নির্দেশনা দেয় ইসলাম। রোদ-বৃষ্টির মালিক যিনি, তাঁর কাছেই সমাধান চাইতে বলে। অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপপ্রবাহের সময় বেশি বেশি ইস্তিগফার করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমা করবেন। তোমাদের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’ (সুরা নুহ: ১০-১১)
বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করে যে নামাজ আদায় করা হয়, তাকে বলা হয় সালাতুল ইসতিসকা বা বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ। এই নামাজের নিয়ম হচ্ছে, খোলা ময়দানে আজান-ইকামতবিহীন প্রকাশ্য কেরাতে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। প্রথম রাকাতে তাকবিরে তাহরিমার পর সাতবার তাকবির দেবে। আর দ্বিতীয় রাকাতে পাঁচবার তাকবির দেবে। প্রতিটি তাকবিরের সময় হাত উঠাবে এবং তাকবিরগুলোর মাঝখানে আল্লাহ তাআলার প্রশংসা এবং মহানবী (সা.)-এর ওপর দরুদ পড়বে। নামাজের পর ইমাম খুতবা দেবেন। খুতবায় বেশি বেশি ইস্তিগফার ও কোরআন তিলাওয়াত করবে। এরপর দুই হাত উঠিয়ে মিনতির সঙ্গে দোয়া করবে এবং হাদিসে বর্ণিত দোয়াগুলো বেশি বেশি পড়বে।
ইসতিসকার নামাজে খুশুখুজু, বিনয়-নম্রতার সঙ্গে গমন করা সুন্নত। একমাত্র আল্লাহ তাআলাই যে বান্দার সব হাজত-প্রয়োজন পূরণ করেন—এ বিশ্বাস অন্তরে জাগ্রত রাখতে হবে। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) খুবই সাদামাটাভাবে, বিনয়-নম্রতা ও আকুতিসহ বাড়ি থেকে বের হয়ে নামাজের মাঠে উপস্থিত হয়েছেন।’ (আবু দাউদ)