ইমদাদুল হক শেখ
সম্পদ আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত। এ নেয়ামত অর্জনের অন্যতম মাধ্যম মেহনতের মাধ্যমে উপার্জন। বৈধ উপার্জনে অর্জিত হয় মানসিক প্রশান্তি। আর অবৈধ উপার্জন বয়ে আনে অশান্তি। ইসলাম বৈধ উপার্জনে যেমন উৎসাহ প্রদান করে, তেমনি অবৈধ উপার্জনের ভয়াবহ ক্ষতির ব্যাপারেও সতর্ক করে। আলোচ্য প্রবন্ধে অবৈধ উপার্জনের চারটি ক্ষতির কথা উল্লেখ করা হলো।
১. দোয়া কবুল হয় না
যারা অবৈধভাবে উপার্জন করে, আল্লাহ তাআলা তাদের দোয়া কবুল করেন না। রাসুল (সা.) এমন এক লোকের কথা বললেন, দীর্ঘ সফরের ক্লান্তিতে যার মাথার চুল উসকোখুসকো। সারা শরীর ধুলোয় ধূসরিত। সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে—হে আমার প্রভু, হে আমার প্রতিপালক, অথচ তার খাদ্য ও পানীয় হারাম, তার পোশাক হারাম, তার জীবন-জীবিকাও হারাম। এমতাবস্থায় তার দোয়া কীভাবে কবুল হতে পারে?’ (তিরমিজি: ২৯৮৯)
২. অকল্যাণ বয়ে আনে
যে সম্পদের সঙ্গে অবৈধতার মিশ্রণ ঘটে, তার ধ্বংস অনিবার্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন, আর দানকে বৃদ্ধি করেন।’ (সুরা বাকারা: ২৭৬)
৩. আসমানি অভিশাপ
যারা সুদ ও ঘুষ নামক অবৈধ লেনদেনে লিপ্ত রয়েছে, তাদের ওপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অভিশাপ। জাবির (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক ও তার সাক্ষীদ্বয়ের ওপর অভিশাপ করে বলেছেন, এরা সবাই সমান অপরাধী।’ (মুসলিম: ৩৯৮৫) অন্য হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘ঘুষদাতা ও গ্রহীতার ওপর আল্লাহর অভিশাপ।’ (ইবনে মাজাহ: ২৩১৩)
৪. দান কবুল হয় না
অধিকাংশ অবৈধ উপার্জনকারীর ধারণা হলো, অবৈধভাবে উপার্জন করে তা থেকে কিছু দান করলেই, শাস্তি কিছুটা লাগব হবে, অথচ বাস্তবতা এর বিপরীত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা পবিত্রতা ছাড়া কোনো সালাত কবুল করেন না এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদের সদকাও গ্রহণ করেন না।’ (নাসায়ি: ১৩৯)
লেখক: জ্যেষ্ঠ শিক্ষক, জামেয়াতুস সুন্নাহ, ঝিনাইদহ সদর