ইমদাদুল হক শেখ, শিক্ষক ও ইসলামবিষয়ক গবেষক
সুরা কদর পবিত্র কোরআনের ৯৭ নম্বর সুরা। ৫ আয়াতবিশিষ্ট এ সুরা মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সুরায় একটি মাহাত্ম্যপূর্ণ রাতের কথা বলা হয়েছে। এ রাতের সম্মানের কারণে তাকে ‘লায়লাতুল কদর’ তথা মহিমান্বিত রাত বা ভাগ্যরজনী বলা হয়।
সুরা কদরের মোট চারটি বিষয় ফুটে উঠেছে। যথা—
এক. পবিত্র কোরআন লায়লাতুল কদরে অবতীর্ণ হয়েছে। এ রাতে লাওহে মাহফুজ থেকে প্রথম আসমানে পূর্ণ কোরআন নাজিল হয়। পরবর্তী সময়ে স্থান-কাল-পাত্রভেদে জিবরাইল (আ.) রাসুল (সা.)-এর কাছে ২৩ বছর ধরে অল্প অল্প করে নিয়ে আসেন। অথবা রাসুল (সা.)-এর কাছে কোরআন নাজিলের সূচনা হয় এই মহিমান্বিত রাতে, যা মাহে রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর কোনো এক রাতে হতে পারে। (মুস্তাদরাকে হাকেম: ২৮৭৯)
দুই. এ রাত হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। অর্থাৎ এক হাজার মাস ইবাদত করলে যে সওয়াব, এই এক রাতে ইবাদত করলে তার চেয়েও বেশি সওয়াব। (ইবনে আবি হাতেম: ৩৪৫২)
তিন. স্রষ্টার অনুমতিক্রমে এ রাতে পৃথিবীতে রহমতের ফেরেশতারা নেমে আসেন। এ রাতে একনিষ্ঠভাবে যারা আল্লাহর ইবাদাতে নিমগ্ন থাকবে, ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমত ও কল্যাণের দোয়া করবে। অথবা এ রাতে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের কাছে বাৎসরিক তাকদির ন্যস্ত করেন যাতে তারা যথাসময়ে কার্য সম্পাদন করতে পারে। (মাউসুয়াতুল কোরআন: ১১ / ৪৮৪)
চার. এ রাত সন্ধ্যা থেকে সুবেহ সাদিক পর্যন্ত কল্যাণ ও শান্তি দ্বারা পরিব্যাপ্ত। বাহ্যত পরিবেশও বেশ আরামদায়ক। হাদিসে এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘এ রাতের কিছু আলামত হলো রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না। নাতিশীতোষ্ণ হবে। নির্মল বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে। এ রাতে ইবাদাতকারীরা অপেক্ষাকৃত বেশি তৃপ্তিবোধ করবে। পরদিন সকালে পূর্ণিমার চাঁদের মতো হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে।’ (ইবনু খুযাইমা: ২১৯০)