আবদুল আযীয কাসেমি
রমজান বান্দার প্রতি আল্লাহর অনন্য উপহার। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের একটা নির্দিষ্ট মৌসুম থাকে, যেখানে তাঁরা বেশি থেকে বেশি লাভবান হয়ে থাকেন। পুরো বছরের লোকসান সে মৌসুমেই তাঁরা পুষিয়ে নেন। ঠিক তেমনিভাবে ইবাদতেরও রয়েছে কিছু লাভজনক মৌসুম। সেগুলোকে কাজে লাগিয়ে বান্দা তার আখিরাতের জন্য প্রচুর পরিমাণে নেকি উপার্জন করতে পারে। রমজান তেমনই একটি লাভজনক মৌসুম।
রমজানকে কাজে লাগাতে পূর্বসূরি আলিমদের আয়োজন ছিল দেখার মতো। হজরত আনাস (রা.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম শাবান মাসের মধ্যেই জাকাত পূর্ণ আদায় করে দিতেন, যাতে রমজানকে একান্তভাবে ইবাদতের মধ্যে কাটানো যায় এবং গরিব লোকজনেরও যেন ইবাদতের সুযোগ হয়। (মুসনাদে আহমদ) অনেক বুজুর্গ সম্পর্কে বলা হয়, তাঁরা রমজানের আগেই দোকানপাট বন্ধ করে দিতেন। ব্যবসায়িক সব ব্যস্ততা শাবান মাসেই শেষ করতেন। অনেকেই তাঁদের দাস-দাসী বিক্রি করে দিতেন; কিংবা মুক্ত করে দিতেন রমজান উপলক্ষে।
দুঃখজনকভাবে আমরা যেন যাবতীয় ব্যবসায়িক ব্যস্ততা তুলে রাখি রমজানের জন্য। রমজানে যেখানে নিজেকে ব্যস্ততা থেকে অবসর করা দরকার, সেখানে আমরা ব্যস্ততার কারণে ফরজ নামাজে অংশ নিতে পারি না। তারাবি সঠিকভাবে আদায় করেন এমন মানুষের সংখ্যা হাতে গোনা। অনেকেই তারাবি এত দ্রুত শেষ করেন যে কোরআনের শব্দগুলো পর্যন্ত ঠিকঠাক আদায় হয় না।
ইবাদতের এই অভাবনীয় লাভজনক মৌসুমের ফসল ঘরে তুলতে আমাদের হতে হবে আল্লাহমুখী। ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা সম্পন্ন করতে হবে রমজানের আগেই, যাতে এ মাসে অহেতুক সময় নষ্ট না হয়। এ ছাড়া অন্যান্য ব্যস্ততাও যথাসম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে। ফজিলতের মাস রমজান কাটুক ইবাদত-বন্দেগিতে—এই কামনা।