নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের পরিবারের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুদকের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহাম্মদ বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন। দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
প্রথম মামলায় জাহাঙ্গীর কবির নানক, তাঁর স্ত্রী ও রাতুল টেলিকমের চেয়ারম্যান সৈয়দা আরজুমান বানু, তাঁর মেয়ে রাতুল টেলিকমের পরিচালক এস আমরিন রাখিকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২(ক)(২) ধারা লঙ্ঘন করে ২৫৯ কোটি ৬২ লাখ ৫ হাজার ১৫৮ টাকা বা ৩ কোটি ৩২ লাখ ৮৪ হাজার ৬৮১ মার্কিন ডলার পাচার করেন। দেশের স্বার্থে আনার যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে অপরাধ করেছেন।
আসামিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
অপর মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও কে টেলিকমিউনিকেশন্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমা ওসমান, প্রতিষ্ঠানটির এমডি তানভীর আহমেদকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে জানা যায়, তাঁদের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার বা ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা পাচার ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা বিটিআরসির আইজিডব্লিউ লাইসেন্সধারী অপারেটর হিসেবে ৯১ কোটি ৫০ লাখ ৯২ হাজার ৮৬৫ টাকা আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল মিনিটের মূল্য বাবদ অর্জিত ১৯৩ কোটি ৯১ লাখ ১৮ হাজার ৬০৩ টাকা মূল্যের ২ কোটি ৫১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৫৮ মার্কিন ডলার (বৈদেশিক মুদ্রা) পাচার করেন।
দুদক বলছে, এই টাকা দেশে আনার যোগ্য বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে মানি লন্ডারিং অপরাধ করেন। আসামিরা অর্থ পাচার করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ২(ক)(২) ধারা লঙ্ঘন করেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, বিগত দিনে শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে দুদকের দুটি মামলাসহ ১৭টি মামলা হয়েছিল। যার মধ্যে কয়েকটি মামলা হাইকোর্ট কর্তৃক স্থগিত রয়েছে। বেশ কিছু মামলা রাষ্ট্র কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়েছে। কয়েকটিতে তিনি খালাস পেয়েছেন। এদিকে গত ২২ আগস্ট নানকের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ও লেনদেন স্থগিত করেন আদালত। অবৈধ সম্পদ অর্জনে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগটি অনুসন্ধান করছে দুদক।