হোম > জাতীয়

সংশোধন আসছে সাইবার নিরাপত্তা আইনে, পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন সাংবাদিক নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

সাংবাদিকদের আপত্তির মুখে সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু সংশোধন করতে যাচ্ছে সরকার। আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কয়েকটি ধারা সংশোধনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ কথা জানান। 

সংশোধিত খসড়া দু-এক দিনের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী। তবে, সংশোধনীগুলোর বিষয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট নন বৈঠকে অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা। বিশেষ করে তাঁরা বিলের ৪২ ধারায় প্রস্তাবিত বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও তল্লাশির ঘোর বিরোধিতা করেছে। 

বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন গত মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। পরে সেটা পরীক্ষার করে পাঁচ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। আজই বিলটি নিয়ে বৈঠকে বসে সংসদীয় কমিটি।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ কে এম রহমতুল্লাহর অনুপস্থিতিতে কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের সভাপতিত্বে আরও অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল, আহমেদ ফিরোজ কবির, নুরুল আমিন, মনিরা সুলতানা ও জাকিয়া পারভীন খানম। সভাপতির বিশেষ আমন্ত্রণে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বৈঠকে অংশ নেন।

এ ছাড়া বিশেষ আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) একাংশের মহাসচিব দীপ আজাদ, বিএফইউজে একাংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা আক্তার, ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রমুখ।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আগে বলেছিলেন, বিলটি সংসদীয় কমিটিতে গেলে সেখানে অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।আজকের বৈঠকে শুধু সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁদের সবাইও পুরোপুরি সন্তুষ্ট হননি।

বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অনেক পরিবর্তন করেছি। ২১ ধারার বিষয়ে বিএফইউজে থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, আমরা তা গ্রহণ করেছি। ৩২ ধারার অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট আমরা বাতিল করে দিয়েছি, এ আইনে সেটা থাকবে না। মিথ্যা মামলার বিষয়ে যে পরামর্শ এসেছে সেটা আমরা গ্রহণ করেছি। সেটা থাকবে। আজকের বৈঠকে এটি চূড়ান্ত হয়েছে।’ 

খসড়া আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছিল, ‘যদি কোনো ব্যক্তি অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের আওতাভুক্ত কোনো অপরাধ কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংঘটন করেন বা করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। এই ধারাটি বাতিল করা হচ্ছে।’

বিলের ২১ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রোপাগান্ডা ও প্রচারণা চালান বা তাতে মদদ দেন, তাহলে তা হবে অপরাধ। এর সাজা হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড।

এই ধারায় কিছু শব্দগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এই ধারায় বিএফইউজের প্রস্তাব ছিল ‘বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণা চালানো হবে অপরাধ’ এটি প্রতিস্থাপন করা। তাদের এই প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে সংসদীয় কমিটি।

প্রস্তাবিত আইনের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সাংবাদিকদের কয়েকটি সংগঠন এটি বাতিলের দাবি জানিয়েছিল। তবে তা পুরোপুরি গ্রহণ করা হয়নি। এখানে পুলিশ পরিদর্শক পর্যায়ের কর্মকর্তারা এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন, এমন সংশোধনী আনা হচ্ছে।

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘তারা কিছু বিষয়ে সংশোধনী এনেছে। ৪২ ধারায় সংজ্ঞাগত কিছু পরিবর্তন এনেছে। সাব-ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার স্থলে ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার করা হয়েছে। তবে আমরা এ ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট নই। আমরা প্রেস কাউন্সিলের কথাই বলেছি।’

বৈঠকে ১৪ দফা দাবি জানিয়েছিল বিএফইউজে (একাংশ)। বৈঠক শেষে এই অংশের সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘তারা কয়েকটি দাবি মেনে নিয়েছে। দু-একটি জায়গায় ভাষাগত পরিবর্তনে এনেছে। তবে, আমরা এতে সন্তুষ্ট নই। আমরা আলোচনাকালে আমাদের ১৪ দফা দাবির বিষয়ে অনড় ছিলাম। বিশেষ করে ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার, তল্লাশির বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছি। আমরা বলেছি স্বাধীন সাংবাদিকতায় বাধাগ্রস্ত হয়—এমন ধারাগুলো বাতিলে করে সংশোধনী আনতেই কেবল আমরা মেনে নেব।’

প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু প্রস্তাব দিয়েছি। যে সমস্ত বিষয়ে সাংবাদিকতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে বিষয়গুলোও নিয়ে আমাদের উদ্বেগ আছে, সেটা আমরা কমিটিতে জানিয়েছি। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা এগুলো সংশোধন করবেন। দু-এক দিনের মধ্যে সংশোধিত খসড়া আইন ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।’

শ্যামল দত্ত বলেন, ২১, ৩২ ধারাসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাঁরা সংশোধন এনেছেন। ৪২ ধারায় সংজ্ঞায় কিছুটা সংশোধন আনা হয়েছে।

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে ‘সাইবার নিরাপত্তা বিল, ২০২৩’ বিলের ওপর বিস্তারিত আলোচনা শেষে পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক সংশোধিত, সংযোজিত ও পরিমার্জিত আকারে রিপোর্ট সংসদে উত্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

সাবেক কৃষিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা, স্ত্রীকে তলব

অবৈধ সম্পদ: সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার ও স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রক্ত ঝরবে কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষিত থাকবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে রিভিউ শুনানি ৯ ফেব্রুয়ারি

রাজনীতিতে ঢুকতে চাই না, প্রধান উপদেষ্টার টাইমফ্রেমে কাজ করছি: সিইসি

রাজধানীর অপরাধজগতে নেতা-সন্ত্রাসীতে আঁতাত

ঢাকাকে ভারতের চোখে দেখার সম্ভাবনা কম

নবীন উদ্যোক্তাদের অভিজ্ঞতা শুনলেন প্রধান উপদেষ্টা

প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের পাকিস্তান সফর, প্রতিরক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠক

সেকশন