ঢাবি প্রতিনিধি
সারা দেশে গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের মুক্তি, গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া এবং দায়ের করা সব ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহারের দাবিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
আজ শনিবার রাত ৮টার দিকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম গুগল মিটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে কঠোর কর্মসূচির দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মাসউদ।
আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘গতকালকে (শুক্রবার) ডিজিএফআই, র্যাব, ডিবির হাত থেকে পালিয়ে কোনোমতে এক জায়গা থেকে সংবাদ সম্মেলন করছি। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি। একদিকে বলা হচ্ছে, ছাত্ররা নাশকতা করেনি। অন্যদিকে আমাদের প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের বেশি স্টুডেন্টকে তুলে নেওয়া হয়েছে। ছাত্ররা যদি নাশকতায় অংশ না নেয় তাহলে কেন তাদের তুলে নেওয়া হচ্ছে? হাজারের ওপর হামলা করে ভয়ংকর পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে।’
মাসউদ বলেন, কোটা সংস্কারে শুধু পরিপত্র নয়, কমিশন গঠন করে সব অংশীজনের মতামত নিয়ে কোটা সংস্কারের স্থায়ী সমাধানে সংসদে আইন পাস করতে হবে এবং দেশব্যাপী ছাত্র হত্যায় জড়িত মন্ত্রী থেকে পুলিশের কনস্টেবলদের (দায়িত্ব থেকে) অব্যাহতি দিয়ে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মাসউদ আরও বলেন, ‘আমরা সারা দেশে বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছি, আমরা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি দিয়েছি। আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে আমরা কঠিন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথে নামব। আমরা পালিয়ে থাকব না। আগামী পরশু দিন (সোমবার) আমরা রাজপথে নামব।’
তিনি বলেন, ‘রোববার সারা দেশে “গণহত্যার” বিরুদ্ধে অনলাইনে–অফলাইনে গ্রাফিতি, দেয়াল লিখন কর্মসূচি পালন করব। আমরা বিদেশে অবস্থানরত ভাইদের বলব, আপনারা হত্যার প্রমাণাদি সব রাষ্ট্রের কাছে পৌঁছে দেবেন।’
আব্দুল হান্নান মাসউদ আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আখতার হোসেনকে কীভাবে টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয়েছে! নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, আবু বাকের মজুমদারকে তুলে নেওয়া হয়েছে। অসুস্থ শিক্ষার্থীকে কীভাবে তুলে নিয়ে যায় আমাদের মাথায় ধরে না! আমরা তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম কিন্তু পাঁচ মিনিটের বেশি থাকতে দেওয়া হয়নি।’
এ সময় মাসউদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিশ্বের সব মানবাধিকার সংস্থা–প্রতিষ্ঠান, প্রভাবশালী রাষ্ট্র ও প্রবাসীদের বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। গুগল মিটের এ সংবাদ সম্মেলনে আরেক সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার, সহসমন্বয়ক রশিদুল ইসলাম রিফাত ওরফে রিফাত রশিদ যুক্ত ছিলেন।