হোম > জাতীয়

পুলিশ ও গোয়েন্দা তৎপরতায় হাসপাতালেও গ্রেপ্তার-আতঙ্ক

আমানুর রহমান রনি, ঢাকা

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতার ঘটনায় আহতদের অনেকেই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু সেখানেও স্বস্তিতে নেই তাঁরা। হাসপাতালগুলোর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁদের জেরা করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। সেই সঙ্গে তুলছেন ছবি, সংগ্রহ করছেন তথ্য। এ অবস্থায় গ্রেপ্তার-আতঙ্কে অনেকেই চিকিৎসা শেষ না করেই হাসপাতাল ছাড়ছেন। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ তিন সমন্বয়ককে গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে আনার পর এই আতঙ্ক আরও বেড়েছে।

গত শনি ও গতকাল রোববার রাজধানীর চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতদের সঙ্গে কথা বলে সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ড-১-এ গিয়ে দেখা যায়, ওই ওয়ার্ডের ১ থেকে ৩৬ নম্বর বেডে সহিংসতায় আহতরা ভর্তি আছেন। তবে তাঁদের অনেকেই জানান, ঘটনার পর বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা ওয়ার্ডে গিয়ে মোবাইল ফোনে ভিডিও করেছেন। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন চিকিৎসাধীন আহতরা।

পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিমুল আহম্মেদ জানান, তিনি মিরপুর ১০ নম্বর এলাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক।অফিসের ডিউটি শেষে ১৯ জুলাই বিকেলে মিরপুর থেকে উত্তর কাফরুলের বাসায় ফিরছিলেন। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন।

শিমুল বলেন, ‘বিভিন্ন লোকজন এসে ওয়ার্ডে ভিডিও করে নিয়েছে। পরে শুনেছি, তারা ডিবির লোক। তারা নাকি মামলা দেবে, এ নিয়ে অনেকেই ভয়ে আছে। আমি বাসায় ফেরার সময় গুলিবিদ্ধ হয়েছি। আমি তো কিছুই জানি না। মামলা দেয় কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন রামপুরায় গুলিবিদ্ধ নাসির উদ্দিন। পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান এই যুবক বলেন, ‘বিভিন্ন ব্যক্তিরা এসে তথ্য নিচ্ছেন, ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন; তাঁরা কেন কী করছেন, তা-ও বুঝতেছি না। তাঁরা নাকি র‍্যাব-পুলিশের সদস্য। আমরা তো ভুক্তভোগী। আমাদের ছবি তুলছে কেন?’

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি থাকা আহত রোগীদের ভেতরেও আছে আতঙ্ক। গত শনিবার পর্যন্ত এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন ৪২৪ জন। তাঁদের মধ্যে মাত্র আটজনকে ভর্তি পাওয়া গেছে। বাকিরা কেউ ভর্তি নেই। তাঁরা সবাই চিকিৎসা নিয়ে চলে যান।

হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন হান্নান নামের এক ব্যক্তি জানান, কাজ থেকে ফেরার পথে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর বাঁ চোখ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি কোনো আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন না, তারপরও ফেনীতে স্থানীয় পুলিশ তাঁর খবর নিয়েছে বলে স্বজনদের কাছে তিনি জানতে পেরেছেন।

সহিংসতায় আহতদের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক চিকিৎসা নিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত শনিবার এই হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, এখানে গুলিবিদ্ধ, বিভিন্ন আহতসহ মোট ১ হাজার ৭৩ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে শনিবার ভর্তি ছিলেন ১৫৯ জন। হাসপাতালটিতে কথা হয় হাসান নামের এক আহতের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘কে কোন এলাকায় আহত হয়েছেন, রোগীদের কাছ থেকে এমন তথ্য নেওয়া হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে কী কারণে নেওয়া হয়েছে, তা জানি না। এ নিয়ে অনেক ভয়ে আছি।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন ১১৯ জন। তাঁদের মধ্যে গতকাল হাসপাতালটিতে গিয়ে দুজনকে ভর্তি পাওয়া গেছে। বাকিরা সবাই চলে গেছেন। হাসপাতালটির একজন ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, অনেকে না বলে চলে গেছেন। পুলিশ এসেছিল জেনে অনেকে হাঁটতে হাঁটতে বের হয়ে যান।

জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে পদত্যাগ করে যা বললেন সারজিস

নেতৃত্বশূন্য সংগঠন, প্রশাসকে অস্বস্তি

৫ আগস্টে সংসদে লুটপাট: শুধু বৈদ্যুতিক সরঞ্জামে খরচ ৭৩ কোটি টাকা

রুশ কোম্পানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, আসছে না পুলিশের হেলিকপ্টার

প্রাথমিক শিক্ষকেরই প্রাপ্য সর্বোচ্চ সম্মান

এক স্থানের জনপ্রতিনিধি কীভাবে গোটা জাতির আইন প্রণয়ন করেন: সলিমুল্লাহ খান

ট্রাম্পের প্রথম দিনের আদেশ: বাংলাদেশের কিছু স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে

ইউনূস-শলৎস বৈঠক: গণতান্ত্রিক রূপান্তরে সহায়তা করবে জার্মানি

১১ বছর ধরে লাশ হাসপাতালের হিমঘরে, বিচারিক আদালতের রায় বাতিলে হাইকোর্টের রুল

যুক্তরাষ্ট্রকে আরও বেশি রোহিঙ্গা নেওয়ার আহ্বান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার

সেকশন