নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে এবার ভারতীয় ধরনে আক্রান্ত আরও ৮ জন শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের কেউই দেশের বাইরে যাননি। এর আগে সাতজনের শরীরে ভারতীয় ধরন (বি.১.৬১৭) শনাক্ত হয়েছিল। তাঁরা সবাই ছিলের ভারত ফেরত। এ নিয়ে জেলায় ভারতীয় ধরনটিতে আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ১৫ জনে পৌঁছল।
জানা গেছে, নতুন শনাক্তদের মধ্যে সাতজন পুরুষ, একজন নারী। প্রত্যেকের বয়স ৫৬ বছরের নিচে। প্রথমবারের মতো এবারও আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টার। ৩৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে এই তথ্য পাওয়া গেছে বলে গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ।
এরই মধ্যে বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও যশোরের স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
জিনোম সেন্টার থেকে জানানো হয়, গত ২৯ মে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চার জন, যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে তিন জন এবং ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একজনের নমুনা যবিপ্রবির ল্যাবে পাঠানো হয়। ঈদের আগে ও পরে ভারত ফেরত ব্যক্তিরা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার পরও আক্রান্ত হওয়ার হার গড়ে ১০ থেকে ১৯ শতাংশ। ফলে স্থানীয় সংক্রমণ হয়েছে কি-না সেটি জানার জন্য বিভিন্ন উপজেলা থেকে সন্দেহভাজন ৩৬ জনের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করা হয়। এতে আটজনের শরীরে ভারতীয় ধরনের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এর আগে গত ৮ মে যবিপ্রবির ল্যাবে প্রথম দুজনের শরীরে এই ধরনের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এ সংখ্যা বেড়ে সাতজনে দাঁড়ায়। ল্যাবটিতে এখন পর্যন্ত ৫৫০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের শরীরে ভারতীয় ধরন পেয়েছে। পাশাপাশি ভারত ফেরতদের মধ্যে দুজন করোনা পজিটিভ হয়েই দেশে আসেন।
দেশে এখন পর্যন্ত আফ্রিকার ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি, ৮৫ জন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ধরনে ২৭ জন ও নাইজেরিয়ার ধরনে আক্রান্ত শনাক্ত ৫ জন। আর যশোরে নতুন করে আটজন মিলে ভারতীয় ধরনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে।
নতুন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, যশোরের জিনোম সেন্টার থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে, স্থানীয় আটজনের শরীরে ভারতীয় ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তার মানে আরও আছে। যারা এসেছেন, তাদের মাধ্যমে এগুলো ছড়াতে পারে।
তিনি বলেন, আমরাও বসে নেই। আগের তুলনায় আইইডিসিআরে নমুনা আসার সংখ্যা বেড়েছে। প্রতিটি জিনোম সিকোয়েন্স করতে আমাদের অনেক সময় লাগে। গত সপ্তাহে আমরা ২৬৩টি করেছি যেখানে ১৪০টি ভ্যারিয়েন্ট পেয়েছি। এবার হয়তো আরও বাড়বে। সামনের সপ্তাহের শুরুতে আমরা সেটি প্রকাশ করবো।