আজকের পত্রিকা ডেস্ক
বাঁশ, কাঠ, বেত ও রঙিন কাগজের কারুকার্যে তৈরি কল্পজাহাজ। ভাসতে ভাসতে এসব কল্পজাহাজ নদীর এপার-ওপারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। জাহাজের ওপরে নেচেগেয়ে চলছে বৌদ্ধ কীর্তন। প্রতিবছরের মতো কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী জাহাজভাসা উৎসব গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে।
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে বাঁকখালী নদীতে এই উৎসবের আয়োজন ছিল। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা ধর্ম-বর্ণের হাজারো নারী-পুরুষ ও শিশু-কিশোর এই উৎসবে যোগ দিতে নদীর পাড়ে ভিড় জমায়। এই উৎসব যেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য মিলনমেলা। এ বছর পাঁচটি কল্পজাহাজ ভাসানো হয়।
উৎসবে কক্সবাজার ও আশপাশের বান্দরবান, চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়িসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে এসেছে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা।
শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীর সঙ্গে নানা বয়সের নারী-পুরুষও আনন্দ মেতে উঠেছেন।
এদিকে খাগড়াছড়িতে এবার প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব পালিত হয়েছে সীমিত পরিসরে। ফলে প্রতিটি বছর আনন্দে মাতোয়ারা থাকলেও এ বছরের প্রবারণা পূর্ণিমায় নেই কোনো উৎসবের আমেজ।
খাগড়াছড়ি সদরের ধর্মপুর আর্যবন বিহারে পরিচালনা কমিটির সভাপতি অচিতময় চাকমা জানান, ‘সকালে বুদ্ধপূজা, বুদ্ধমুক্তিদান, পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টোপকরণসহ মহাসংঘদান করে এভাবের প্রবারণা অনুষ্ঠান শেষ করি।’
বান্দরবানের থানচিতেও প্রবারণা উৎসব সীমিত আকারে পালন করেছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়। নেতারা জানান, প্রতিবছর এই উৎসব ঘিরে তিন দিনব্যাপী বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করে এলেও এবার পাহাড়ে খাগড়াছড়িতে ‘সাম্প্রতিক উত্তপ্ত পরিস্থিতির’ কারণে দুই দিনব্যাপী সীমিত পরিসরে উৎসব পালনের সিদ্ধান্ত হয়।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আত্মশুদ্ধি ও অশুভকে বর্জন করে সত্য ও সুন্দরকে বরণে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা পালন করেছেন অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। গতকাল ভোরে পঞ্চশীল ও অষ্টশীল প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটির সূচনা হয়। এ সময় বৌদ্ধবিহারগুলোতে সমাবেশ ঘটে বৌদ্ধভিক্ষুসহ রাখাইন নর-নারীদের। দিনভর নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উৎসব চলে।