নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য চুরি ভিন্ন জিনিস। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবি এই বিষয়টিকে গুলিয়ে ফেলেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সচিবালয়ে আজ বুধবার এক অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, রোজিনার (প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক) ঘটনাটি অনভিপ্রেত। দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহের একটা নিয়ম আছে। দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য চুরি এক জিনিস নয়। আমি টিআইবির বক্তব্যের সঙ্গে একমত নই। টিআইবি তথ্য সংগ্রহ ও তথ্য চুরি দুটি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য প্রকাশের প্রতিবন্ধকতা সরকার কোভিড শুরু হওয়া থেকেই শুরু করেছে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। তার কিছু দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি, ব্যাপকভাবে আলোচিত ঘটনা যেটি রোজিনা ইসলামসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের পিএস-এর কক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি নেওয়ার অভিযোগে গত ১৭ মে রোজিনা ইসলামকে একটি কক্ষে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইনে নির্ধারিত ফরমে যে কোনো অফিসের তথ্য চেয়ে যেকেউ আবেদন করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট অফিস সেই তথ্য না দিলে তথ্য কমিশনের অভিযোগ জানানো যায়। এই প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্য দিতে গাফিলতি করলে অনেক সময় তথ্য কমিশন জরিমানা ছাড়াও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। তথ্য কমিশন এমন এক লাখ ২০ হাজার আবেদন নিষ্পত্তি করেছে।
‘আমি মন্ত্রীর পদে থেকেও কোনো অফিসে গিয়ে বিনা অনুমতিতে কোনো গোপনীয় তথ্য নিয়ে নিলে আমি অপরাধী। সে ক্ষেত্রে সেই অফিসের কর্তৃপক্ষ আমার বিরুদ্ধে যেকোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। সে তথ্য কোনো রাষ্ট্রীয় গোপন নথি হলে সেই অপরাধটা আরও বড়। প্রত্যেক মন্ত্রীকে শপথের সময় রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা রক্ষার শপথও নিতে হয়।’
টিআইবির মতো সংগঠন থাকার দরকার আছে মত দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, তারা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করবে এটিই স্বাভাবিক, আমরাও চাই সেটি। টিআইবি বিভিন্ন সময় যে গবেষণার কথা বলে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গবেষণা না করে একটি রিপোর্ট তৈরি করে সেটিকে গবেষণা বলে চালিয়ে দেয়, এটি সমীচীন নয়। যেসব দেশ থেকে টিআইবি ফান্ড পায় সেসব নিয়ে তাদের কখনো কিছু বলতে দেখিনি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী জানান, করোনার টিকা পেতে বাংলাদেশ একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করেনি। যেখান থেকে টিকা পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কারণেই চীন থেকে টিকা এসেছে, অন্য দেশ থেকেও টিকা আসছে।
এর আগে জাতির পিতার ১৩০০ ছবি নিয়ে ‘ছবির ভাষায় মহানায়ক বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ অ্যালবামের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী। বর্ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান নাসরীন হোসেন লুইজার সম্পাদনায় এই অ্যালবামটি প্রকাশিত হয়েছে।
অ্যালবামটি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে তথ্যমন্ত্রীর সহায়তা চান লুইজা। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল উপস্থিত ছিলেন।
অ্যালবামে বঙ্গবন্ধুর অনেক দুর্লভ ছবি রয়েছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রত্যেকটা ছবির ক্যাপশন বাংলার পাশাপাশি ইংরেজিতে দেওয়ায় সবার বুঝতে সুবিধা হবে। অ্যালবাম দেখে ইতিহাস জানা সহজ। কারণ বই পড়তে সময় দিতে হয়। এ ধরনের অ্যালবামের সাহায্যে বঙ্গবন্ধুকে নতুন প্রজন্মে সঙ্গে সহজেই পরিচয় করিয়ে দেওয়া যায়।