নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বাংলাদেশের বিভিন্ন কারাগারে থাকা ৯৫ ভারতীয় জেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিপরীতে ভারতে আটক ৯০ বাংলাদেশিকেও মুক্তি দিয়েছে নয়াদিল্লি। গত রোববার উভয় পক্ষ এই বিনিময় কার্যক্রম সম্পন্ন করে।
এর পরপরই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, মৎস্যজীবীদের কয়েকজন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। তাঁদের বেঁধে মোটা লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়েছিল। কোমর থেকে পা পর্যন্ত চোট রয়েছে।
ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে মমতার সেই বক্তব্য এসেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এমন অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কারা অধিদপ্তর।
আজ মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমে কারা মহাপরিদর্শকের পক্ষে সহকারী কারা মহাপরিদর্শকের (উন্নয়ন) পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় ‘ভারতীয় মৎস্যজীবীদের লাঠি দিয়ে মেরেছে বাংলাদেশ, বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’ শিরোনামে প্রচারিত সংবাদের প্রতি কারা অধিদপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। সংবাদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। বক্তব্যে তিনি কয়েকজনের খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা, মোটা লাঠি দিয়ে মারধর করা, দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা এবং চিকিৎসা না করানোর কথা উল্লেখ করেছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, গত ২ জানুয়ারি পটুয়াখালী জেলা কারাগার থেকে ৩১ জন এবং বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে ৬৪ জন জেলেকে মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি দেওয়ার সময় ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। হস্তান্তরকালে সংশ্লিষ্ট ভারতীয় নাগরিকেরা কারাগারে নির্যাতনের কোনো অভিযোগ করেননি। সব বন্দীকে সুস্থ অবস্থায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ সংক্রান্তে সহকারী সার্জন সুস্থতার উপযুক্ত সনদ দেন। সনদে কারাগারে তাঁরা ভালো ব্যবহার, সুচিকিৎসা পেয়েছেন এবং বাংলাদেশি বন্দীদের সঙ্গে সমঅধিকার পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি অনেকে এক পোশাকে আসায় কারা কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় শীতবস্ত্রসহ সব পোশাকাদি সরবরাহ করেছে।
এ সংক্রান্ত একটি সংবাদে ভারতীয় গণমাধ্যম ‘নিউজবাংলা’ মিডিয়ায় প্রচারকালে সাক্ষাৎকারে একজন বন্দী জেলে জানান, কারাগারে তাঁদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি। সুতরাং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ সত্য নয়।
বাংলাদেশ সরকারের একটি সংবেদনশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কারা অধিদপ্তর প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত অসত্য অভিযোগের প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতের দায়িত্বশীল ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান সংবেদনশীল বিষয়ে উত্থাপিত তথ্য/বক্তব্যের সঠিকতা নিশ্চিত করবেন, যা দুই দেশের সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কারা মহাপরিদর্শক।