হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

ফলন ভালো, খুশি কৃষক

সম্পাদকীয়

আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১১: ৩৭

খবরটি একটি বিশেষ এলাকার হলেও, এটি ভালো খবর এবং এমন ভালো খবর সারাদেশেই তৈরি হোক—সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আমাদের দেশসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশে এক অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। সব দেশেরই অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে, বাড়ছে বেকারত্ব, কর্মহীনতা। কোনো কোনো দেশে কিছু খাদ্যসংকটের কথাও শোনা যাচ্ছে। বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি এখনও বেসামাল হয়ে ওঠেনি। তবে নানা বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। লকডাউনের কারণে অসংখ্য মানুষের ভাগ্যবিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত মানুষের অনাহারে থাকার খবর কোনো এলাকা থেকে পাওয়া না গেলেও ভয় কাটছে না।

গত বছর করোনায় মানুষের মৃত্যু শুরু হওয়ার পর এর সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার নানা ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক ও সামাজিক কিছু সংগঠন এমনকি কিছু দরদি মানুষ ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিরন্নœ মানুষের খোঁজ করে খাদ্যসহ অন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। সে জন্য রিকশাচালক, দিনমজুর ও কর্মহীনদের কিছুটা সুবিধা হয়েছিল।

কিন্তু এ বছর অর্থাৎ করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় প্রাথমিকভাবে অসহায় মানুষের পাশে সেভাবে কাউকে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না। কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সামাজিক সংগঠনের ত্রাণ তৎপরতার কোনো খবর নেই। ৩৫ লাখ পরিবারকে নগদ অর্থসহায়তা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহায়তা দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

করোনাকালে উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে সুফল পাওয়া গেছে মৌলভীবাজার জেলায়। সংবাদপত্রে খবরে জানা যাচ্ছে, জেলায় অতিরিক্ত তিন হাজার হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হয়েছে। বেশির ভাগ জমিতেই ফলানো হয়েছে সরকারি প্রণোদনায় হাইব্রিড ধান।

বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষক এবং কৃষি বিভাগ খুশি। পানির অভাবে যেসব জায়গায় হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত থাকত, কিন্তু এবার একটু বেশি পরিশ্রমে পাল্টে গেছে চিত্র। পতিত থাকা জমিচাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে কৃষি বিভাগ তাঁদের নানা সহায়তা দিয়েছে।

বিনামূল্যে হাইব্রিড ধান বীজ, সার, নিকটবর্তী শাওনছড়া থেকে পানি আনার জন্য ছড়ার উপরের অংশে বাঁধের ব্যবস্থা, ফিতা পাইপ ও এলএলপির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। হাইব্রিডের সঙ্গে কিছু ব্রি ৮৮, ৮৯ ও ৯২ জাতের ধান বীজও দেওয়া হয়। কৃষকেরা অনেকটা উৎসবের আমেজে এই পতিত জমিতে সরকারের দেওয়া বীজ চাষ করেন। চাষাবাদকালে জমির দিকে বিশেষ নজর রাখে কৃষি বিভাগ। বীজতলা থেকে জমি তৈরি ও রোপণের ১৪০ দিনের মাথায় মাঠভরা পাকা ধানের সোনালি রূপ দেখে এখন মহাখুশি কৃষকেরা।

এটি একটি উৎসাহজনক খবর। আমাদের জমি উর্বরা। একটু বেশি মনোযোগ দিলে জমিতে যে সোনা ফলে, এটি সবার জানা কথা। আমরা আশা করব, দেশে যাতে খাদ্যসংকট দেখা না দেয়, সে জন্য অধিক ফসল ফলানোর দিকে কৃষক এবং কৃষি বিভাগ সমান মনোযোগী হবে। আমাদের চাষের জমি খুব বাড়ানোর সুযোগ নেই। তাই জোর দিতে হবে ফলন বাড়ানোর দিকেই। কৃষিবিজ্ঞানীরা তাঁদের নিরলস চেষ্টায় অনেক সফল হয়েছেন। দেশে খাদ্য উৎপাদন ক্রমাগত বাড়ছে। এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। তাই মৌলভীবাজারের সাফল্যের খবরও ছড়িয়ে দিতে হবে সারাদেশে।

বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব

সহিংসতা হয়নি তা নয়

রিওভাইরাস: সচেতনতা জরুরি

চালের বাজারে অস্থিরতা

সেকশন