হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

ফুটপাতে বাজার

সম্পাদকীয়

আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২১, ১০: ৫২

ছোট্ট একটি সংবাদ। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা বাজার নিয়ে কথা। সেখানে ফুটপাত দখল করে বসে গেছে দোকানিরা। ফলে যা হবার তাই হয়েছে, বিপাকে পড়েছে পথচারীরা। ফুটপাতই নেই, হাঁটবে কোন দিক দিয়ে?

ঘটনা এমন নয় যে এই প্রথম এরকম একটি সংবাদ দেখতে হলো। ‌ কালিয়াকৈরের মানুষেরাই প্রথম ফুটপাতে দোকান বসিয়ে গিনেজ বুকে নাম লেখাবার চেষ্টা করেনি।‌ এই কাণ্ড বহু আগে থেকে বহু জেলায় বহু ফুটপাতে বহুদিন আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে। ‌ কেন দেখা যাচ্ছে, সেটাই হলো ব্যাপার।

এ কথা না বলে দিলেও চলে, শ'য়ের ওপর যে দোকানিরা ফুটপাত দখল করে বসেছে, তাদের এত ক্ষমতা হয়ে যায়নি যে, সরকারি জায়গা দখল করে তারা দোকান সাজিয়ে বসবে! কোন এক বাঁশিওয়ালার অদৃশ্য সুর তাদের মোহগ্রস্ত করেছে। এই সুরের বিনিময় মূল্য এক শ থেকে দেড় শ টাকা। প্রতিদিন ব্যবসার লাভের অংশ থেকে এই টাকাটা বাঁশিওয়ালাদের দিয়ে দিলেই কেল্লাফতে! কেউ আসবে না তাদের সরিয়ে দিতে। ‌ কার আছে এত বুকের পাটা?

কে সেই বাঁশিওয়ালা, সেটা নিয়ে ভাবতে হলে ধাঁধায় পড়ার কোনো সুযোগ নেই। হয় সরকারি দলের মাসলম্যানরা, অথবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো অশুভ চক্রের হাতেই রয়েছে সেই বাঁশি। এদের ভিত্তিমূল এতটাই শক্ত যে, দিনের পর দিন এরা ফুটপাত দখল করে রাখলেও কেউ টুঁ শব্দটি করতে পারবে না।

যে কেউ ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ করলেই এরকম শত শত ফুটপাতের বাজার দেখতে পাবেন। সবখানেই রয়েছে সেই বাঁশিওয়ালাদের দৌরাত্ম্য। সমাজে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি তাদের কাজটা ঠিক ভাবে করে, তাহলে তাদের মধ্যে থাকা অশুভ চক্র অথবা ক্ষমতাসীনদের মাস্তান বাহিনী ফুটপাত দখল করতে পারে না। ‌ এখনো যে পারছে, তার অর্থ একটাই, তারা ঠিকভাবে কাজ করছে না।

আগের কালে প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এমন কিছু মানুষ থাকত, যারা অন্যায়ের প্রতিবাদে সোচ্চার হতো। সরকার তাদের কথার মূল্য দিত। ‌ ইদানিং সেটাও চোখে পড়ছে কম। ‌ সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করার ঘটনা দিনে দিনে কমছে। এটা কোনো শুভ লক্ষণ নয়। এই বাঁশিওয়ালারা যত দিন দাপটের সঙ্গে টিকে থাকবে, তত দিন দেশের সকল মানুষকেই ফুটপাতে গড়ে ওঠা বাজারকে সমীহ করেই চলতে হবে। ‌ অন্যথা হতে পারে শুধু পাশার দান উল্টে গেলে। হঠাৎ করে এই বাঁশিওয়ালার বাঁশিটি কেড়ে নিলেই ফুটপাত দিয়ে হাঁটবে পথচারী।

সেই সম্ভাবনা আছে কি নেই, সে প্রশ্ন কাকে করতে হবে, সেটাও এক মস্ত ধাঁধা। এই ধাঁধার ঘোরে থাকতে থাকতেই বাঁশিওয়ালার কর্তৃত্বে আরও কিছু নতুন দখলদারিত্বের খবর পড়ার জন্য মনকে প্রস্তুত করা ছাড়া উপায় আছে কি?

বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব

সহিংসতা হয়নি তা নয়

রিওভাইরাস: সচেতনতা জরুরি

চালের বাজারে অস্থিরতা

সেকশন