হোম > মতামত > সম্পাদকীয়

আহা, শিঙাড়া!

সম্পাদকীয়

আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২১, ২০: ৪৮

সুস্বাদু যে শিঙাড়াটা খাচ্ছি ঢাকার বনশ্রীতে, তার দাম ১০ টাকা। ঢাকায় এখন ৩ টাকা ও ৫ টাকা দামের দু রকমের শিঙাড়া পাওয়া যায়। হঠাৎ দেখি, আকারে একটু বড় হয়ে শিঙাড়া দিব্যি দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। ঘটনাটা কী?

আসলে এভাবেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। সবার অলক্ষ্যে আকার একটু বাড়িয়ে দিলেই হলো, ভোজনরসিক মানুষ ঠিকই কিনে খাবেন এই স্বাদু খাদ্যটি। অথচ ভেবে দেখুন, এই দুর্মূল্যের বাজারেও আলুর কেজি ১৮ টাকা, ময়দাও ৬৫ টাকার মধ্যে, যে তেলে ভাজা হয়, তা আরও কত কাজে ব্যবহৃত হয়! ফলে একটি শিঙাড়া বানাতে বড়জোর ৩ থেকে ৪ টাকা খরচ হয়। মজাসে হাতিয়ে নেওয়া হয় বাকি টাকা!

একটা সময় ছিল, যখন ৪ আনায় শিঙাড়া পাওয়া যেত। সেটা ৮ আনা হতে সময় লেগেছে অনেক। তারপর ১ টাকা ঘুরে ২ টাকায় আসতেও লাগিয়েছে কয়েক বছর। একলাফে ৫ টাকায় যখন এল শিঙাড়া, তখন তা আকারে ছিল অনেক বড়। কিন্তু কিছুদিন পর খাদককে ভুলিয়ে-ভালিয়ে আকারে এল পরিবর্তন। একসময় দেখা গেল ২ টাকায় যে শিঙাড়া ছিল, সেটার আকার ধারণ করেছে ৫ টাকার বনেদি শিঙাড়াটি। এতে যে আভিজাত্য কমল, সে ভাবনা তার নেই। কারণ, আভিজাত্য তখন ঢুকে পড়েছে মালিকের পকেটে।

মজার ব্যাপার হলো, আলুর দাম বেড়ে ৪০ টাকা হলেও কিন্তু শিঙাড়ার দাম বাড়বে না। ঘাপটি মেরে থাকবে ১০ টাকার মধ্যেই। কারণ, এখন যে কাউকে প্রশ্ন করে দেখুন, শিঙাড়ার দাম ১৫ টাকা হলে খাবে কি না। একজন মানুষও পাবেন না যিনি এই দামে একটা মাত্র শিঙাড়া খেয়ে পেট ভরাবেন। তবে মুদ্রাস্ফীতি হলে অন্য কথা। তখন হয়তো ২০০ টাকাও হতে পারে একটা শিঙাড়ার দাম!

সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন রাশিয়ায় পরিণত হলো, তখন হেসেখেলে মুদ্রাস্ফীতি গিয়ে পৌঁছেছিল ভাবনার অতীত এক জায়গায়। যে গরুর মাংসের কেজি ছিল সাড়ে ৩ রুবল, সেটাই হয়ে গেল ১৮ হাজার রুবল, ভাবতে পারা যায়?

আমরা কখনোই চাইব না, শিঙাড়ার দাম হোক কয়েক হাজার টাকা। বরং, খুব আশা করব, রেস্তোরাঁ মালিকেরা অকারণে শিঙারার দাম ১০ টাকা থেকে কমিয়ে ৫ টাকা করবেন। কিন্তু এই আন্দোলনে আমরা সাধারণ মানুষকে শামিল করতে পারব বলে মনে হয় না। অলস মস্তিষ্ক যেমন শয়তানের কারখানা, তেমনি ক্ষুধার্ত পেটও খাদ্যাকাঙ্ক্ষী। তাই শিঙারাপ্রেমী মানুষের পেটে খাদ্যবস্তুটি পড়ে যখন, তখন কি সে আর দাম নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী হয়?

বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব

সহিংসতা হয়নি তা নয়

রিওভাইরাস: সচেতনতা জরুরি

চালের বাজারে অস্থিরতা

সেকশন