সম্পাদকীয়
ফুলের মতো পবিত্র ও সুন্দর রাফা আল মাসরি নামের এক কিশোরী প্রাণ হারিয়েছে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে। গত কয়েক দিনের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা দেড় শতাধিক। এর মধ্যে ৪১টি শিশু। ইসরাইলের বিমান হামলার জবাবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসও ইসরায়েলের ব্যাপক রকেট হামলা চালিয়েছে। ১৪ মে ভোর থেকে ইসরাইল হামলা তীব্র করেছে। গাজা সীমান্তে ট্যাংকসহ অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে দেশটি।
মূলত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদকে ঘিরে কয়েক দিন ধরে দফায় দফায় ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ইসরাইলের সংঘর্ষ চলছে। কয়েক শ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক হলেও কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি। তবে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলি সহিংসতা বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে উত্তেজনা বাড়ছে, তা প্রশমনের তাগিদ দিয়েছে বিভিন্ন দেশ।
বলা যায়, পূর্বপুরুষদের অপকর্মের ফল ভোগ করছে এই ভূখণ্ডের মানুষ, যার সূত্রপাত বহু বছর আগে। সে সময় যুদ্ধের মাধ্যমে প্রায় সবকিছু ফয়সালা করার নিয়ম ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেই সমাধান মেনে নেয়নি পরাজিতরা। ফলে পরাজিতরা চেষ্টা করেছে শক্তি সঞ্চয়ের এবং অনুকূল সময়ের, যার প্রতিফলন ইসরাইল-ফিলিস্তিন অব্যাহত যুদ্ধ।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান সম্ভব দুই পক্ষের সমন্বয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে, যে রাষ্ট্র হবে সেক্যুলার ও গণতান্ত্রিক। উভয় পক্ষের সমতাভিত্তিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে সরকার পরিচালিত হবে। সব নাগরিকের অধিকার, মর্যাদা ও সমান সুযোগ নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল টেকসই শান্তি, স্থিতিশীলতা ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। উভয় পক্ষ যত তাড়াতাড়ি এসব বিষয় উপলব্ধি করবে, ততই মঙ্গল। না হলে রাফা আল মাসরির মতো নিষ্পাপ শিশুদের মৃত্যুর শোক ও বেদনা বহন করতে হবে দিনের পর দিন।