সম্পাদকীয়
বাংলাদেশে পুরুষের চেয়ে নারীর গড় আয়ু চার বছর বেশি। পুরুষের গড় আয়ু ৭১ বছর। আর নারীর গড় আয়ু ৭৫ বছর। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ‘বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি ২০২১’ এই তথ্য প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমান জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৬৩ লাখ। এ দেশে বছরে ১ দশমিক ১ শতাংশ হারে জনসংখ্যা বাড়ছে। একজন বিবাহিত নারী তাঁর প্রজনন বয়সে গড়ে দুটি সন্তানের জন্ম দিচ্ছেন।
জাতিসংঘের জনসংখ্যাবিষয়ক এই প্রতিষ্ঠান বলেছে, নিজের শরীরের ওপর একজন নারীর কতটুকু নিয়ন্ত্রণ আছে, তার ওপর নির্ভর করে জীবনের অন্য ক্ষেত্রে তাঁর নিয়ন্ত্রণ কতটা থাকবে। বিশ্বব্যাপী নারীর শরীরের ওপর তাঁর অধিকারের বিষয়টি অগ্রাহ্য করার নানা ধরন দেখা যায়। বাংলাদেশে নারীশিক্ষা ও অধিকার বিষয়ে তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার উপযুক্ত বয়সী শিশুদের ৯৫ শতাংশ বিদ্যালয়ে যায়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাওয়ার এই হার ৬২ শতাংশ। তবে ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে ৫৯ শতাংশ কিশোরীর বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর হাতে নির্যাতনের শিকার হন ২৯ শতাংশ নারী।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের এ বছরের প্রতিবেদনে নারীর শরীরের ওপর নারীর অধিকারকে কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নারীর গড় আয়ু বাড়ার বিষয়টি ইতিবাচক হলেও আমাদের দেশে নারীর অধিকার ও মর্যাদার ক্ষেত্রে সমতা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। বর্তমান সরকার নারীবান্ধব আইন, নীতি, পদক্ষেপ নেওয়া সত্ত্বেও নানা কারণে নারীরা এখনও সব ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছেন। নারীর প্রতি পরিবার, সমাজ এবং ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন না এলে নারীর জীবন বৈষম্যমুক্ত হবে না।