হোম > বিজ্ঞান > গবেষণা

নতুন গবেষণায় মিলল মস্তিষ্কের কম্পিউটার মডেল তৈরির সূত্র

অনলাইন ডেস্ক

প্রাণীর মস্তিষ্ক মূলত অসংখ্য নিউরনের সমষ্টি। কিন্তু প্রাণীভেদে মস্তিষ্কের সক্ষমতা আলাদা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে স্নায়ুকোষের ঘনত্বের বিন্যাসের ওপর এই দক্ষতা নির্ভর করে।

এক নতুন গবেষণা বলছে, মস্তিষ্কে স্নায়ুকোষের ঘনত্ব একটি মৌলিক গাণিতিক নিয়ম মেনে চলে। বেশ কয়েক ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণীর মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ পরীক্ষা করে এ গাণিতিক সূত্র আবিষ্কার করেছেন তাঁরা। মোটামুটি সব স্তন্যপায়ী প্রাণীর মস্তিষ্কেই নিউরনগুলো এই বিন্যাস মেনে চলে। ফলে গবেষকেরা আশা করছেন, এ আবিষ্কার ভবিষ্যতে মস্তিষ্কের কম্পিউটার মডেল তৈরিতে কাজে লাগবে।

জার্মানির জুরিখ রিসার্চ সেন্টারের গবেষক এবং এ গবেষণা প্রতিবেদনের সহলেখক আইতর মোরালেস-গ্রেগরিয় বলেন, ‘মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে বিন্যস্ত হয়, ফলে আমরা বিষয়টির পরিসংখ্যানগত ব্যাখ্যা করতে পারি, যা স্নায়ুকোষের ঘনত্ব ও মস্তিষ্কের মধ্যকার সংযোগ— এই দুইয়ের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।’

মোরালেস-গ্রেগরিও ও তাঁর সহকর্মী আলেক্সান্ডার ভন মিগেন নতুন এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। গবেষণাটি গত জুলাইয়ে সেরেব্রাল করটেক্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। ভ্যান মিগেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পোস্ট ডক্টরাল গবেষক। 

মস্তিষ্কের মডেল তৈরির চেষ্টার সময় গবেষণা দলটি অনুধাবন করে, মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলোর ঘনত্বকে কোন বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে তা সম্পর্কে তারা খুব কমই জানে। আগের এক গবেষণায়, বিভিন্ন প্রজাতির করটেক্সের বিভিন্ন স্তরে স্নায়ুকোষের ঘনত্ব তুলনা করা হয়েছিল। করটেক্স হলো মস্তিষ্কের বাইরে কুঁচকে থাকা অংশ বা মস্তিষ্কের শ্বেত পদার্থকে আবৃত করে রাখে। তবে, কর্টিক্যাল অঞ্চলে স্নায়ুকোষের ঘনত্বের কেমন পার্থক্য হতে পারে তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের খুব কমই জানা ছিল। 

গবেষকেরা ইঁদুর, আমেরিকার একধরনের ছোট বানর–মারমোসেট, এক জাতের ছোট লেজওয়ালা বানর–ম্যাকাক, মানুষ, গ্যালাগোস বা বুশ বেবিজ, প্যাঁচার মতো দেখতে আউল মাঙ্কি ও বেবুনের মস্তিষ্কের গঠন পর্যবেক্ষণে প্রাপ্ত তথ্য একত্র করেন। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে তাঁরা দেখেন, এই স্তন্যপায়ীদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো একটি সাধারণ নিয়ম মেনে অঞ্চলভেদে ঘনীভূত হচ্ছে। বিভিন্ন কর্টিক্যাল অঞ্চলে স্নায়ুকোষের এ ঘনত্ব লগ নরমাল ডিস্ট্রিবিউশন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। 

লগ নরমাল ডিস্ট্রিবিউশনের লেখচিত্রের বাম দিকের অংশ বেশ ফাঁপা থাকে ও ডানের অংশ লেজের মতো সরু থাকে। মিগেন বলেন, এর মানে হলো, মস্তিষ্কের অধিকাংশ অঞ্চলে স্নায়ুকোষের গড় ঘনত্ব প্রায় একই। কিন্তু কিছু অঞ্চলে ঘনত্ব অস্বাভাবিক বেশি। এই উচ্চ ঘনত্বের অঞ্চলগুলোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কারণ, এগুলো বিরল কিন্তু সাধারণ গাণিতিক নিয়ম থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিচ্যুতি।

ভ্যান মিগেন বলেন, ‘আমরা যদি রেখাচিত্রের কেবল তির্যক অঞ্চলের স্নায়ুকোষের ঘনত্ব দেখি তবে তেমন কোনো পার্থক্য দেখতে পাব না। কিন্তু ডান পাশে লেজের মতো প্রসারিত অংশের মানে হলো উচ্চ ঘনত্বের অঞ্চলে সামান্য পরিবর্তন হলেই মস্তিষ্কে স্নায়ুর সংযোগ বা এর কার্যক্রমে বেশ বড় পরিবর্তন আসতে পারে।’ 

ভিন্ন স্তন্যপায়ীতে একই নিয়মে স্নায়ুকোষের বিন্যাসের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন গবেষকেরা। বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী, পরিবেশের কোনো পরিবর্তনের প্রভাবে দেহকোষ বিভাজিত হয়ে স্নায়ু কোষ সৃষ্টি হয়েছে। মস্তিষ্কের কোষের ঘনত্বের এই লগ নরমাল ডিস্ট্রিবিউশন প্রাকৃতিকভাবেই ঘটেছে। এর জন্য বাইরের কোনো প্রভাবকের প্রয়োজন হয়নি।

গবেষকেরা এখন স্নায়ুকোষের বিন্যাসের এ নিয়ম কীভাবে মস্তিষ্কের একটি অংশের সঙ্গে অন্যটির সংযোগে প্রভাব ফেলে এবং এ নিয়মের ব্যত্যয় কোনা স্নায়বিক সমস্যা তৈরি করবে কি না তা খুঁজে দেখছেন।

গাঁজা সেবনে সিজোফ্রেনিয়া ও পাগল হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে: গবেষণা

শনির মতো বলয় ছিল পৃথিবীরও!

১৫ লাখ বছর আগে পৃথক মানব প্রজাতির সহাবস্থানের প্রমাণ মিলল পদচিহ্নে

বৃহত্তম পরিসরে আইনস্টাইনের তত্ত্ব পরীক্ষা—তিনি সঠিক ছিলেন

জিপিএস ছাড়াই ব্যাকটেরিয়া থেকে লোকেশন জানাবে এআই

গাছের মতো সূর্যের আলোতে বাড়তে পারে, নতুন প্রাণী কোষ তৈরি করলেন বিজ্ঞানীরা

ফ্রান্সের গুহায় মিলেছে মানুষের আগের প্রজাতিটির হারিয়ে যাওয়ার রহস্য

সবুজের দেখা মিলছে বিরান সাহারায়

২০০ বছরের মধ্যে গলে যাবে ‘ডুমসডে গ্লেসিয়ার’, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে ২ ফুট

পৃথিবীর কাছে আসছে ‘দ্বিতীয় চাঁদ’, কবে দেখা যাবে জানালেন বিজ্ঞানীরা

সেকশন