সানজিদা সামরিন
এই তো পড়া শুরু করেছ দেখছি! অনেক কথা আছে তোমার সঙ্গে আমার। টুকুন, আমাকে কী করেছে দেখেছ? সব বলব, আজ তোমাদের।
আমি আগে ছিলাম এক লিটারের কোকা-কোলার বোতল। টুকুনের বাবা বাসার নিচের দোকান থেকে আমাকে নিয়ে এসেছিলেন। কোকা-কোলা শেষ হওয়ার পর টুকুনের মা আমাকে ময়লার ঝুড়ির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন; তখন টুকুন বলল, ‘মা, বোতলটা ফেলো না, আমি একটা জিনিস বানাব।’
এ কথা বলেই আমার গা থেকে ‘কোকা-কোলা’ লেখা লেবেলটা তুলে ভালো করে ধুয়ে নিল। এরপর কাঁচি দিয়ে কেটে দুই ভাগ করল। বোতলের নিচের অংশটা লাগবে না বলে ফেলে দিল সে।
তারপর—হলুদ এনামেল রং দিয়ে অর্ধেক করে আমাকে রাঙিয়ে নিল সে। এবার বারান্দায় কড়া রোদে শুকাতে দিল।
শুকিয়ে এলে উল্টে নিল আমাকে। মানে বোতলের মুখের অংশটা নিচে আর কাটা অংশটা ওপরের দিক করে রাখল।
কাটা অংশ থেকে তুলির আঁচড়ে লাল অ্যাক্রিলিক রং এমনভাবে টেনে নিল টুকুন, যা দেখতে মনে হয় যেন পাগড়ি পরে আছি।
এবার সাদা আর্ট পেপার গোল করে কেটে বানাল চোখ। কালো মার্কার দিয়ে চোখের মণি এঁকে চোখের চারপাশে বর্ডারও করল টুকুন। এবার আইকা দিয়ে পাগড়ির নিচেই চোখ দুটো বসিয়ে দিল বোতলের গায়ে।
এরপর? কালো অ্যাক্রিলিক রঙে তুলি ভিজিয়ে আঁকল রাজকীয় গোঁফ।
টুকটুকে লাল অ্যাক্রিলিক রং ছুঁইয়ে আঁকল ঠোঁট। এবার আমাকে বারান্দায় রেখে এল, যাতে রং ভালোভাবে শুকিয়ে যায়।
এবার একটুখানি মাটি ভরে তাতে ইঞ্চি প্ল্যান্টের ডাল পুঁতে দিল টুকুন।
দেখলে তো, একটা বেভারেজের বোতল থেকে কী করে রাজা হয়ে উঠলাম আমি!