নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে নিখোঁজের একদিন পর স্থানীয় খাল থেকে জসিম উদ্দিন নামে আট বছর বয়সী এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার নগরীর বন্দর থানাধীন পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গা ও আবিদার পাড়ার মাঝামাঝি এলাকায় নাছির খাল থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের ধারণা, এলাকাটিতে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা প্রকল্পের আওতায় আবিদার পাড়ার নালার ওপর হাঁটাচলার জন্য সড়ক নির্মাণ করা হয়। সেই নালা-সড়কের ওপর ৫–৬টি স্ল্যাব দুদিন আগে খোলা হয়েছিল। এ সময় শিশুটি খেলতে গিয়ে নিচে পড়ে পানিতে তলিয়ে যেতে পারে। পরে তাঁর দেহ ভাসতে ভাসতে আবিদার পাড়ার নাছির খালে চলে আসে।
নিহত সাইদুল ইসলাম ওই এলাকার রিকশাচালক আলী আকবরের ছেলে। সে আগ্রাবাদ শিশু নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে পড়ত।
জসিম উদ্দিনের বোন আঁখি আক্তার মিম আজকের পত্রিকাকে জানান, মা, নানির সঙ্গে তারা দুই ভাই-বোন থাকেন। তাঁদের বাবা আরেকটি বিয়ে করে আলাদা থাকেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সাইদুল বাসা থেকে বের হয়েছিল। পরে তাকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজে পাওয়া যায়নি। সকালে খালে তার লাশ পাওয়া যায়।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, শিশুটি গতকাল শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিল। স্থানীয় লোকজন সকালে খালে শিশুটির লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায়।
ওসি বলেন, শিশুটির মরদেহে নেগেটিভ কোনো কিছুর আলামত পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা মনে করছেন, নালার ওপর স্ল্যাব খোলা থাকায় শিশুটি খেলার সময় নালায় পড়ে গিয়ে মারা যেতে পারে। বাকিটা তদন্তের পর জানা যাবে।
শিশুটির মরদেহ উদ্ধারের পর সিডিএ জলাবদ্ধতা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিকদের বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খাল সংস্কার ও বক্স ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। আমরা জানতে পেরেছিলাম, বক্স ড্রেনের ওপর লোডেড ট্রাক যাওয়ার কারণে কয়েকটা স্ল্যাব ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমি ৫-৬টা স্ল্যাব তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিই।’
প্রকল্প পরিচালক ফেরদৌস বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাত ৮টার দিকে ৫-৬টা স্ল্যাব তুলে নেওয়া হয়। শিশুটি কিন্তু নিখোঁজ হয়েছিল গতকাল শনিবার বিকেল ৫টার দিকে। তাহলে শিশুটির স্ল্যাবের অংশে ড্রেনে পড়ে নিখোঁজের শঙ্কা মোটামুটি নেই বললেও চলে। তারপরও যেহেতু বক্স ড্রেনের মাত্র ২০০ গজ দূরে খালে লাশটা পাওয়া গেছে, আশা করি, পুলিশের ইনভেস্টিগেশনে সবকিছু পরিষ্কার হবে।’