চাঁদপুর প্রতিনিধি
এবার কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য প্রস্তুত চাঁদপুরের ‘রাজাবাবু’। ষাঁড়টির ওজন করা হয়েছে ১ হাজার ১০০ কেজি। বিক্রির জন্য খামারের মালিক দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা। তবে ক্রেতাদের দর-দাম করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খামার মালিক।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের গ্রিন বাংলা ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা যায় তিন বছর বয়সী ক্রস জাতের ষাঁড় রাজাবাবুকে। খামারে বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে শুয়ে আছে ষাঁড়টি। খামারের মালিক পারভীন ইসলাম কাছে গিয়ে বললেন, ‘রাজাবাবু দাঁড়াও।’ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রাজাবাবু দাঁড়িয়ে গেল। তিনি যাই বলছেন, বাধ্যগত প্রাণীদের মতোই ষাঁড়টি তাঁর কথা অনুসরণ করছে। বিশাল দেহের এই ষাঁড়ের সামনের অংশ বেশ চওড়া।
কথা বলে জানা যায়, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন ইসলাম। তিনি চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে শখ করে নিজস্ব জায়গায় গড়ে তুলেছেন এই গ্রিন বাংলা ডেইরি ফার্ম নামের প্রতিষ্ঠান। প্রথমে লালন-পালন করেছেন ২০টি বিদেশি জাতের মুরগি। এরপর নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য ২০০৭ সালে দুটি গাভি পালন শুরু করেন। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে গবাদিপশুর সংখ্যা। এখন বড় ধরনের একটি খামারে পরিণত হয়েছে এটি। খামারে গাভি, ষাঁড়, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ষাঁড় ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন তিনি। তবে সেগুলো সাইজে একটু ছোট। ভেড়া বিক্রি শুরু হয়েছে ১০-১৫ হাজার টাকা দরে।
খামারি পারভীন ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূলত আমার খামারটি একটি আদর্শ খামার। আমি খুব পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখি। নিজস্ব জমিতে উৎপাদিত ঘাস, খড়, খইল ও ভুসি খাওয়ানো হয় রাজাবাবুসহ অন্যান্য গবাদিপশুকে। বর্তমানে গাভি, ষাঁড় ও বাছুরসহ ৬৬টি গরু আছে খামারে। এগুলো লালন-পালন করার জন্য সাতজন শ্রমিক কাজ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার খামারেই ক্রস জাতের ফ্রিজিয়ান গাভি রাজাবাবুকে জন্ম দেয়। এখানে এটি তিন বছরের কিছু অধিক সময়ে বড় হয়েছে। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ের লোকজন এসে এটি মেপে আমাকে জানালেন, ওজন ১ হাজার ১০০ কেজি। আমি কোরবানি দেওয়ার জন্য যারা আগ্রহী, তাদের কাছে দাম চেয়েছি ১৫ লাখ টাকা। ক্রেতার পছন্দ হলে দাম কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।’
ষাঁড়টির ওজন সম্পর্কে চাঁদপুর সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. মুকবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কার্যালয়ের লোকজন কয়েক দিন আগে এটি মেপেছেন। এর ওজন হয়েছে ১ হাজার ১০০ কেজি।
চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. বখতিয়ার উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পারভীন ইসলামের খামারটি একাধিকবার পরিদর্শন করেছি। খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। জেলায় ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক খামার গড়ে উঠেছে। এ বছর কোরবানির জন্য জেলায় চাহিদা ৭০ হাজার গবাদিপশু। প্রস্তুত রয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। বাকি চাহিদা অন্য জেলা থেকে আমদানি হলে মিটবে।’